25 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১০:১৯ | ২২শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
‘কেনাফ’ চাষে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় থাকে
কৃষি পরিবেশ

‘কেনাফ’ চাষে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় থাকে

‘কেনাফ’ চাষে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় থাকে

বরিশাল বিভাগের চার জেলায় লবণাক্ত জমিতে পাটের বিকল্প হিসেবে আঁশজাতীয় ফসল ‘কেনাফ’ নতুন আশা জাগাচ্ছে। এরই মধ্যে নতুন এই ফসলের আবাদ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই)।

বরিশাল বিভাগের চার জেলা পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা ও পিরোজপুরের প্রায় ৩ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর লবণাক্ত জমি বছরের অধিকাংশ সময় পতিত থাকে। এই জমিকে বহু ফসলি করার লক্ষ্যে কেনাফ আবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের কলাপাড়া উপকেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় গত এপ্রিলে পরীক্ষামূলকভাবে ১২ জন কৃষককে দিয়ে এই ফসল আবাদ করানো হয়েছে, এতে ব্যাপক সফলতাও মিলেছে।

তাঁরা জানান, বিজেআরআই উদ্ভাবিত পাটের বিকল্প হিসেবে আঁশজাতীয় ফসল কেনাফ একাধারে লবণ–সহিষ্ণু এবং জলোচ্ছ্বাসে টিকে থাকতে সক্ষম। অপর দিকে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি এটির অর্থনৈতিক গুরুত্বও অনেক।

বরিশাল বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের ৪ জেলায় ৩ লাখ ৩৮ হাজার হেক্টর জমি লবণাক্ত। এসব জমিতে আমন তোলার পর লবণাক্ততার কারণে আর কোনো ফসল ফলানো যায় না।

এ কারণে এ অঞ্চলের কৃষির উৎপাদনকে ক্রমে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। কৃষকেরাও লবণাক্ততার কারণে কৃষিতে অভিযোজন–সক্ষমতা বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছেন। কিন্তু লবণাক্ততা, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসসহ জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের নানামুখী অভিঘাত মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।

পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা গবেষণার পর পাটের দুটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেন। এর একটি তোষা পাট, অপরটি কেনাফ। এরপর এই দুটি জাত ছাড় করে জাতীয় বীজ বোর্ড।



এখন দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জাতটি ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছরই প্রথম বরিশালের উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত ও অনুর্বর জমিতে নতুন ধরনের এই ফসলের চাষ শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে জমির উর্বরতা বাড়বে এবং লবণাক্ততা কমবে।

ইনস্টিটিউট সূত্রে আরও জানা গেছে, কেনাফের উৎস আফ্রিকায়। হুবহু পাটের মতোই, তবে পাট নয়। পাটের চেয়ে ফলন বেশি। লবণাক্ততা, খরা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি মোকাবিলা করেই কেনাফ বেড়ে উঠতে পারে।

এর ফলে এটি দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বপন উপযোগী। কেনাফের ক্ষেত্রে পাটের চেয়ে নিড়ানি ও পরিচর্যা কম লাগে। এটির রোগবালাই প্রতিরোধক্ষমতাও বেশি।

বরিশাল আঞ্চলিক কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক বলেন, দেশীয় বিজ্ঞানীরা নতুন ফসল কেনাফের জাত উদ্ভাবন করায় এ অঞ্চলে এ ফসল নতুন সম্ভাবনা হিসেবে কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এবারই প্রথম ২০ শতক জমিতে কেনাফ আবাদ করেছেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পাখিমারা গ্রামের শহিদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘এবার প্রথমবার ২০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক কেনাফ চাষ করেছিলাম। গত বছরের এপ্রিলে রোপণ করা ফসল থেকে প্রতি শতাংশে ১২ কেজির মতো আঁশ পেয়েছি। প্রথমবার সফল হওয়ার পর চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আবার কেনাফ আবাদ করেছি বীজের জন্য।

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জানুয়ারির প্রথম দিকে প্রতি শতাংশে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি বীজ পাব। যা দেখছি, ধানের চেয়ে কেনাফ চাষে লাভ বেশি।’

পটুয়াখালীর পাট গবেষণা উপকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আফলাতুন কবির বলেন, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত জাতগুলোর মাধ্যমে উপকূলীয় প্রায় ১০ লাখ হেক্টর অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব। কেনাফের আবাদ সম্প্রসারিত হলে পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে বলে মনে করেন তিনি।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত