31.6 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ১:৫৭ | ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
নওগাঁ শহরের গৃহস্থালির বর্জ্য যমুনায়, পরিবেশের দূষণ বাড়ছে
পরিবেশ দূষণ

নওগাঁ শহরের গৃহস্থালির বর্জ্য যমুনায়, পরিবেশের দূষণ বাড়ছে

নওগাঁ শহরের গৃহস্থালির বর্জ্য যমুনায়, পরিবেশের দূষণ বাড়ছে

পচা ও উচ্ছিষ্ট খাবার এবং গৃহস্থালির ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে আছে নদীর পাড়ে। স্তূপে প্লাস্টিকের খালি বোতল থেকে শুরু করে পলিথিনসহ বিভিন্ন ধরনের অপচনশীল নানা সামগ্রী আছে।

এসব বর্জ্য নদীর পানিতে পড়ে পানি দূষিত হচ্ছে। ময়লার স্তূপের পাশেই ঘাট। ঘাটে থালাবাটি পরিষ্কার করছিলেন এক গৃহবধূ। সম্প্রতি নওগাঁর ‘হৃৎপিণ্ড’ নামে পরিচিত ছোট যমুনা নদীর পারঘাটি এলাকায় এ দৃশ্য দেখা যায়।

শুধু পারঘাটি এলাকায় নয়, নওগাঁ শহরের অন্তত ২৫টি স্থানে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা ও বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীর তীরে। এর ফলে নদীর পানি কালো হয়ে পড়েছে। আশপাশে মশা-মাছি উড়ছে। নদীতীরের বাসিন্দারা পড়েছেন দুর্ভোগে।

পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে ছোট যমুনা নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে নদীটি দূষিত হচ্ছে। বর্জ্য ফেলার কার্যক্রম বন্ধ করা না হলে দূষণ আরও ভয়াবহ হবে।

নওগাঁ শহরের পারঘাটি ধোপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, ‘শহরের অন্যান্য এলাকায় বাসাবাড়ি থেকে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ময়লা-আবর্জনা নিয়ে যান।

কিন্তু আমাদের এলাকায় বাসাবাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা নেওয়া হয় না। এ ছাড়া আশপাশে ডাস্টবিনও নেই। ফলে বাধ্য হয়ে বাসাবাড়ির বর্জ্য নদীর তীরে গিয়ে ফেলছেন বাসিন্দারা।’



স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, শহরের ডিগ্রি কলেজ, পারঘাটি, শিবপুর, আলুহাটি, লিটন ব্রিজ, কালিতলাসহ অন্তত ২৫টি ঘাটসংলগ্ন নদীর তীরে বাসাবাড়ি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কারখানার বর্জ্য ফেলে দূষণ করা হচ্ছে। অনেক স্থানে নদীর বাঁধ থেকে নদীর ভেতরের অংশে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, চালকল গড়ে তোলা হচ্ছে।

এগুলো থেকে বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া বাসাবাড়ির শৌচাগার থেকে বর্জ্য নালা দিয়ে নদীতে পড়ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ থেকে নজরদারি এবং পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় এমন দূষণ চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ছোট যমুনার মৃত্যুঘণ্টা বাজানোর অন্যতম কারণ শহরের নালা-নর্দমার পানি নদীতে ফেলা। মাঝেমধ্যে পানি দূষিত হয়ে জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার মতো অক্সিজেন থাকে না। প্রায়ই নদীতে মাছ ও জলজ প্রাণী মরে ভেসে ওঠে।

বাপা কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর বলেন, শুধু ছোট যমুনা নদী নয়, সারা দেশেই নদীগুলোর একই অবস্থা। নদী হচ্ছে জীবন্ত সত্তা। মানুষের প্রয়োজনেই নদীকে বাঁচাতে হবে।

নদী রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের আদেশও আছে। কিন্তু প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার অবহেলা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অসচেতনতার কারণে নদীগুলোর অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।

নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্জ্য যেন যত্রতত্র ফেলা না হয়, সে জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে বাসাবাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মাধ্যমে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তবে পৌরসভার জনবলসংকটের কারণে এখনো সব বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। দূষণ রোধ করতে নদীতীরে ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে নদীদূষণের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিললে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত