ব্লকচেইন প্রযুক্তির ব্যবহার: অবৈধ কাঠের বাণিজ্যের নেটওয়ার্ক ভাঙতে ডিজিটাল নজরদারি
বিশ্বব্যাপী বন উজাড় (deforestation) এবং অবৈধ কাঠের বাণিজ্য (Illegal Logging) পরিবেশগত অপরাধের অন্যতম প্রধান উৎস। এই চোরাচালান চক্রকে ভাঙতে আন্তর্জাতিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলি এখন ব্লকচেইন (Blockchain) প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে।
এটি কাঠের উৎপত্তিস্থল থেকে শুরু করে ভোক্তার কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত পুরো সাপ্লাই চেইনকে একটি অপরিবর্তনীয় এবং স্বচ্ছ (immutable and transparent) ডিজিটাল লেজারে ট্র্যাক করার সুযোগ দিচ্ছে।
ব্লকচেইনভিত্তিক এই ট্র্যাকিং সিস্টেমে, প্রতিটি কাটা গাছের লগ বা কাঠের ব্যাচে একটি ডিজিটাল টোকেন বা ‘স্মার্ট কন্ট্রাক্ট’ যুক্ত করা হয়। এই টোকেনটি জিও-ট্যাগিং, সময় এবং বন উজাড়ের লাইসেন্সের মতো তথ্য বহন করে।
এটি নিশ্চিত করে যে, যদি কোনো কাঠের উৎস সন্দেহজনক বা অবৈধ হয়, তবে তা তাৎক্ষণিকভাবে ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে ধরা পড়ে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার (WWF)-এর সহযোগিতায় পরিচালিত একটি পাইলট প্রকল্প ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আমাজনের কিছু অংশে সফলভাবে কার্যকর করা হয়েছে।
এই প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এটি সাপ্লাই চেইনে মানুষের হস্তক্ষেপ এবং জালিয়াতির সুযোগ প্রায় অসম্ভব করে তোলে। অবৈধ কাঠ ব্যবসায়ীরা প্রায়শই মিথ্যা নথি ব্যবহার করে তাদের পণ্যকে বৈধ হিসেবে চালিয়ে দেয়।
ব্লকচেইন সেই জালিয়াতি ধরতে সক্ষম। তবে, এর ব্যাপক ব্যবহারের জন্য ছোট আকারের স্থানীয় বন উজাড়কারী প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ডিজিটাল সাক্ষরতা (Digital Literacy) বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত অবকাঠামো স্থাপন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
