অবৈধ দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে ঘাগড়া খাল
দিনাজপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী ঘাগড়া খালের পাড় ঘেঁষে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ ও সংস্কারকাজ করা হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে। তবে সেই খাল আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যেতে শুরু করেছে। খালে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। উচ্ছেদ হওয়া স্থানে পুনরায় বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
অস্তিত্ব নেই খালের উভয়পাড়ে লাগানো এক তৃতীয়াংশ গাছপালার। সামনে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে এমন আশঙ্কা শহরবাসীর।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২১ সালে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পানি উন্নয়ন বোর্ড আড়াই কোটি টাকা খরচ করে ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটির ১৫ কিলোমিটার অংশ সংস্কার করা হয়। উচ্ছেদের আগে জেলা প্রশাসন পাউবো ও পৌরসভার সঙ্গে সমন্বয় করে খাল খনন ও উচ্ছেদ কাজে ১২ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে।
ওই কমিটি তখন প্রাণনাথপুর, বালুবাড়ি, খামার কাচাই, উত্তর ফরিদপুর, খামার, ঝাড়বাড়ী, পাহাড়পুর, কসবা ও কাঞ্চন মৌজায় ৪৩৮ জন অবৈধ দখলদারের তালিকা তৈরি করে।
খালের জায়গায় ৬৩টি সেমিপাকা বাড়ি, ১০৬টি টিনশেড ঘর, চারটি দ্বিতল ভবন ও একটি একতলা ভবনের তালিকা প্রস্তুত করে এবং ২০২১ সালে ২৪ ডিসেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। খাল পুনঃখনন ও সংস্কার করা হয়।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুলতান কামাল উদ্দিন বাচ্চু জানান, ঘাগড়া ক্যানেল পুনঃখনন ঠিক মতো করা হয়নি। আমাদের দাবি, আসলে এটি পরিকল্পনা মোতাবেক খনন করা উচিত। বিভিন্ন স্থানে এটি আবারও ভরাটসহ বেদখল হয়ে যাচ্ছে।
সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, শহরকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করার জন্য ঘাগড়া খালকে পুনঃখননের যে ব্যবস্থা নেয়া হয়, সেটা সঠিকভাবে কাজে আসেনি।
দায় স্বীকার করে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব দুলাল বলেন, দখল-দূষণ রোধ ও খাল রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে নেই। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড উদ্যোগ নিলে কাজটি সম্ভব।
দিনাজপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে ঘাগড়া খালটি শহরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ২০২১ সালে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়। সারফেস ড্রেন নির্মাণ ও হাঁটাপথ তৈরি করতে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’