40 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৫:৩১ | ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
আগামী ৫০ বছর পর উধাও হয়ে যাবে শীত ঋতু
পরিবেশ ও জলবায়ু

আগামী ৫০ বছর পর উধাও হয়ে যাবে শীত ঋতু

আগামী ৫০ বছর পর উধাও হয়ে যাবে শীত ঋতু

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিশ্ব ক্রমশ উষ্ণ হয়ে উঠছে। আর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে দেশের শীত ঋতুর ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ৫০ বছর পর এই অঞ্চলের প্রকৃতি থেকে শীত ঋতু উধাও হয়ে যাবে।

আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমেই শীত ঋতুর ব্যাপ্তি কমে আসছে। এই ঋতুতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ৮০ থেকে ১শ’ভাগ পর্যন্ত কম হচ্ছে। গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়ছে। ২০৩০ সালে তাপমাত্রা বাড়ার হার প্রধানত দেখা দেবে শীতের মাসগুলোতে।

ইন্টারন্যাশনাল প্যানেল অব ক্লাইমেট চেঞ্জ আইপিসিসি বা জলবাযু বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্যানেলের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে। এরইমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব স্পষ্ট হতে শুরু করছে। প্রায় সব ঋতুতে এর প্রভাব পাওয়া যাচ্ছে।



জাতিসংঘের এই বিজ্ঞানী প্যানেল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, মানুষের নানা কর্মকান্ডের পরিণতিতে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন দ্রুত হারে সাগর পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে এবং বরফ গলছে। বরফ গলা পানি গিয়ে পড়ছে সাগরে।

আইপিসিসির নতুন এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, সাগরে তাপ বাড়ার ফলে আবহাওয়া দিনকে দিন বিপজ্জনক আচরণ করবে। সামুদ্রিক ঝড় বেশি হবে, জলোচ্ছ্বাস বাড়বে।

আবহাওয়া অফিসের সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বাড়ছে। শীতকালে (ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে) যেখানে স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫.৪ ও ২৬.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪.২ ও ১২.৪ ডিগ্রী। দেখা গেছে, এই তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব বাংলাদেশে শীতের ওপর পড়ছে। ফলে শীতকালের ব্যাপ্তি কমছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে পৌষ-মাঘ এই দুই মাসকে শীত ঋতু ধরা হলেও ঋতু বৈচিত্র্যের ধরণ অনুযায়ী প্রকৃতিতে অনেক আগেই শীতের আনাগোনা শুরু হয়। শীতের এই বৈশিষ্ট্যে এখন আর নেই। ভরা মৌসুমেও শীতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। শীতকালে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে শীতের ফসল উৎপাদনের ওপর এর প্রভাব পড়বে।



বিশেষজ্ঞরা জানান, আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তনকে কখনও উচ্চ তাপমাত্রা, প্রচুর বৃষ্টিপাত, কখনও অতিরিক্ত আর্দ্রতা এবং ঋতুভিত্তিক ভিন্নতা ইত্যাদি বিষয় দ্বারা সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বাড়ার হার প্রধানত শীতের মাসগুলোতেই বেশি পরিলক্ষিত হবে। আগামীতে শীত শুষ্ক মৌসুমে পরিণত হবে। এ ঋতুতে বৃষ্টিপাত প্রায়ই হবে না। উষ্ণতা বাড়বে, দেখা দেবে খরা। শীতের মাত্রাও আস্তে আস্তে কমে আসবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শীতকালেই বেশি স্পষ্ট হবে।

গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ২০৭০ সালের শীত, গ্রীষ্ম ঋতুতে বাষ্পীভবনের অনেক পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, এ পরিবর্তনের ফলে বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হবে। যার ফলে ব্যাপক বন্যা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে শীতকালে বৃষ্টিপাত প্রায় হবেই না।

ফলে শীতকাল শুষ্ক ও খরা মৌসুমে পরিণত ২০৩০ সালের শীতকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমার হার হবে নগণ্য। কিন্তু ২০৭৫ সালে শীতকালে বৃষ্টিপাত প্রায় হবেই না।

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাবে দেখা গেছে, গত ৫০ বছরে দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শতকরা ০.৫। ধারণা করা হচ্ছে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তাপমাত্রার গড় ১.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস এবং ২১০০ সাল নাগাদ ২.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস বাড়বে। তাপমাত্রা বাড়ার এই ধারা অব্যাহত থাকলে প্রকৃতি থেকে শীত ঋতু উধাও হয়ে যাবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত