আমাজন জঙ্গলের গাছ কেটে ব্রাজিলে পরিবেশ সম্মেলনের প্রস্তুতি
পৃথিবীর ফুসফুসে পরিবেশ সম্মেলন। আগামী নভেম্বরে ব্রাজিলের বেলেম শহরে COP অর্থাৎ পরিবেশ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। বেলেম হল আমাজনের প্রবেশপথ। ভেবেচিন্তেই এবার আমাজনের বুকে এই আয়োজন বিশ্বনেতাদের।
আর সেই কারণে সেখানে পৌঁছতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ জঙ্গল কেটে তৈরি হচ্ছে চার লেনের বিশাল রাস্তা! আর তাতেই উঠছে প্রশ্ন। পরিবেশ সম্মেলনের নামে আমাজন অরণ্য ধ্বংস করে রাস্তা তৈরির মতো প্রাণঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কেন?
আমাজনের জঙ্গলে এখন চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। শহর ছাড়িয়ে জঙ্গলের নির্জনতা এখন খানখান করে দিচ্ছে বুলডোজার, ড্রেজিংয়ের শব্দ! আমাজনের প্রবেশ পথ ব্রাজিলের বেলেম শহর। তাকে কেন্দ্র করেই চলছে চার লেনের রাস্তা তৈরির কাজ।
লক্ষ্য একটাই, আগামী নভেম্বরে পরিবেশ সম্মেলনের সময়ে আমাজনের ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি করা। ওই সম্মেলনে প্রায় ৫০ হাজার অতিথির হাজির থাকার কথা।
তাঁদের যাতায়াতের জন্য শহরের ট্রাফিক মসৃণ থাকার ব্যবস্থা করতেই জঙ্গলের বুক চিরে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। গাছ কাটা, জঙ্গলের সবুজ সাফ করার জন্য এখন এখানে সদাসর্বদা ভারী ভারী যন্ত্রের ভয়ংকর শব্দ। বেলেম লাগোয়া আমাজনের ত্রিসীমানায় আর নেই পশুপাখিরা।
কিন্তু পৃথিবীর ফুসফুসে এমন নির্বিচার নিধনযজ্ঞ কেন রুখে দিচ্ছেন না পরিবেশপ্রেমীরা? উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রের সবুজ হত্যা আটকাতে পারছেন না কেন? সে চেষ্টা যে হয়নি, তা নয়।
আমাজনের জঙ্গলবাসীরা সবার আগে রাস্তা তৈরির কাজ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ জঙ্গল থেকেই ফল সংগ্রহ করে দৈনন্দিন জীবনযাপন করেন।
তাঁরা বলছেন, ‘ধ্বংস হয়ে গেলাম!’ কারণ, এই রাস্তা তৈরির জন্য যে তাঁদের স্বস্থান থেকে উচ্ছেদ হতে হচ্ছে, তার জন্য কোনও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেই এখনও। বয়স্করা বলছেন, ‘এখানেই জন্ম-কর্ম-সংসার। এখনক কোথায় যাব?’
ব্রাজিল প্রশাসনের তরফে পরিবেশ মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘এই সম্মেলন আমাজনের জন্য নয়, আমাজনের মধ্যে। অর্থাৎ আমাজনের স্বাস্থ্য নিয়ে না ভাবলেও হবে!’
জঙ্গলবাসীর আশঙ্কা, এই শুরু, এরপর আমাজনের বুকে ধ্বংসের ছাপ স্থায়ী হয়ে যাবে।