করোনা ভাইরাস এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক জারীকৃত সর্তকতা
বর্তমানে সারা বিশ্বের এক আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস। চীনে এ ভাইরাসের উৎস। এখন পর্যন্ত চীনে প্রায় ২৮০০ ব্যক্তি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং এ পর্যন্ত মারা গিয়েছে ৮০ জনের মত। ইতো মধ্যে চীনের পাশ্ববর্তী কয়েকটি দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশ এ ভাইরাস প্রতিরোধ সর্তকতা জারী করেছে।

৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) চীনের হুবেই প্রদেশের উহান সিটিতে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগিদের কয়েকটি ক্ষেত্রে সতর্কতা জারী করে। নিউমোনিয়া আক্রান্তদের ভাইরাসটি পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, সেটি অন্য কোনও পরিচিত ভাইরাসের সাথে মেলে না। এটি তখন উদ্বেগ তৈরী করে,কারণ যখন কোনও ভাইরাস নতুন হয় তখন আমরা জানি না যে, এটি কিভাবে লোকদেরকে আক্রান্ত করে বা লোকেরা কিভাবে আক্রান্ত হয় এবং কিভাবে এর চিকিৎসা নিতে হয়।
এর এক সপ্তাহ পরে, ৭ জানুয়ারী ২০২০ এ চীনা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে, তারা ভাইরাসটি সনাক্ত করেছে। নতুন ভাইরাসটি হলো একটি করোনা ভাইরাস, যা সাধারনত সর্দি, Severe Acute Respiratory Syndrome (SARS) and Middle East respiratory syndrome (MERS-CoV) ভাইরাসসমূহের পরিবার ভুক্ত। এ নতুন ভাইরাসটির অস্থায়ীভাবে নামকরণ করা হয়েছিল “2019-nCoV”।
ভাইরাস সর্ম্পকে আরও জানার জন্য, কিভাবে মানুষকে এটি আক্রান্ত করে, কীভাবে আক্রান্তদের চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং দেশগুলি কীভাবে ইহা প্রতিরোধ করতে পারে- তা সনাক্ত কার পর হতেই চীনা কর্তৃপক্ষ এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কাজ করে যাচ্ছে।
যেহেতু এটি একটি করোনা ভাইরাস, যা সাধারন শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতা সৃষ্টি করে, লোকেরা কিভাবে নিজেকে এবং আশেপাশের লোকজনকে এ রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে – সে বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিছু পরামর্শ প্রদান করেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমন হতে নিরাপদ থাকার জন্য (WHO) এর মানদন্ড ভিত্তিক সুপারিশগুলোতে, ভালো করে হাত ধোয়া এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাস্থ্যকর রীতি অবলম্বন করা এবং নিরাপদ খাদ্য গ্রহন করা অর্ন্তভূক্ত রয়েছে, তা হলঃ-
- সাবান বা অ্যালকোহল দ্বারা ঘঁষে এবং পরিষ্কার জল ব্যবহার করে সবসময় হাত পরিষ্কার করুন।
- কাঁশি এবং হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ এবং নাককে কনুই বা টিস্যু দিয়ে ঢেকে রাখুন, তাৎক্ষণিকভাবে টিস্যু ফেলে দিন এবং তার পর পরই হাত ধুঁয়ে পরিষ্কার করুন।
- জ্বর এবং কাঁশিতে আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠতা (Close contract) এড়িয়ে চলুন।
- যদি আপনার জ্বর, কাঁশি হয় এবং শ্বাস নিতে সমস্যা হয় তবে তাড়াতাড়ি চিকিৎসা সেবা নিন এবং আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী/ডাক্তারকে আপনার পূর্ববর্তী ভ্রমণ বৃত্তান্ত অবহিত করুন।
- করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত অঞ্চলের জীবিত প্রাণীর বাজার/খামার পরিদর্শণ করার সময়, জীবন্ত প্রাণীর সংস্পর্শ হতে দূরে থাকুন।
- কাঁচা পশুর মাংস/হাঁস মুরগী, পাখির কাঁচা বা কম সিদ্ধ ডিম খাওয়া এড়িয়ে চলুন। রান্নার পূর্বে কাঁচা মাংস, দুধ বা প্রাণীর অঙ্গগুলি যত্ন সহকারে ও নিরাপদে প্রসেস করতে হবে এবং রান্না করা ও কাঁচা খাবারের দূরত্ব বজায় রাখা উচিত, বিশেষ করে ফ্রিজে একসাথে রাখা এড়িয়ে চলুন।
- ঘন ঘন হাত ধোয়া, বিশেষত অসুস্থ ব্যক্তিদের বা তাদের পরিবেশের সাথে দেখা করার পর।
- খামার বা প্রাণীদের সাথে যোগাযোগ এড়ানো।
- তীব্র শ্বাস প্রশ্বাসের সংক্রমনের লক্ষণযুক্ত ব্যাক্তিদের কাঁশি নিরাপদে যথাস্থানে ফেলুন এবং দূরত্ব বজায় রাখুন।
- স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে/হাসপাতালে বিশেষত জরুরি বিভাগগুলোতে ভাইরাস সংক্রমন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবহার বাড়ান।
WHO এর website দেওয়া সর্তকতা সমূহ হুবহু নিন্মে প্রদত্ত হল:-