গাইবান্ধায় গত রবিবার (২৪ মে) থেকে বুধবার (২৭ মে) গভীর রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। একইসঙ্গে ভারি বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টি। ঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে দুই শতাধিক কাঁচাপাকা ঘর-বাড়ি, শুয়ে পড়েছে ধান গাছ, ঝড়ে গেছে পাকা ধান।
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার সাতটি উপজেলায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এখন এই ধান কাটার ভরা মৌসুম। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) পর্যন্ত শতকরা ৯১ ভাগ অর্থাৎ ১ লাখ ১৬ হাজার ২৫ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়ে গেছে। আরও ৯ ভাগ ধান অর্থাৎ ১১ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমির ধান কাটা অবশিষ্ট রয়েছে।

সাদুল্লাপুরের তরফসাদুল্যা গ্রামের এক কৃষক জানান, ঝড়ো হাওয়ায় জমিতে জমা পানিতে ধান শুয়ে পড়েছে। তাই পেটের ভাত জোগাতে ঈদের দিন ধান কেটে মাড়াই করেছি। তা না হলে প্রতিদিন রাতে যেভাবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। শেষে এই ধানও ঘরে তুলতে পারব না। একই উপজেলার কিশামত শেরপুর গ্রামের কৃষক জানান, ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে তার ৩ বিঘা জমির পাকা ধান গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম রেজানুল ইসলাম বাবু জানান, ঝড়ে গঙ্গানারায়ণপুর (গাছুপাড়া) গ্রামের ২০টি পরিবারের ঘরবাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে। এসব পরিবারের মানুষেরা এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। নতুন করে কীভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করবেন, এনিয়ে তারা দুশ্চিনতায় পড়েছেন।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী লুতফুল হাসান বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে দেড় শতাধিক কাঁচাপাকা ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও গাছপালা উপড়ে গেছে ও বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহারিয়া খান বিপ্লব বলেন, “মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ায় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির শিকার মানুষরা আবেদন করলে, তাদের সহায়তা করা হবে।”
গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, “ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে জেলায় দেড় হাজার বিঘা জমির পাকা বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ধানের মধ্যে বিআর-২৯ ও বিআর-৫৮ জাতের ধানই বেশি। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন