গত ২০ বছরে রং বদলে গেছে মহাসাগরের
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিস্থিতিতে পুরো বিশ্ব। উষ্ণতা বৃদ্ধি, অতিবৃষ্টি বা খরা এবং অসময়ে বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি বিশ্বের অধিকাংশ দেশ।
ইউরোপের অধিকাংশ খাল ও হৃদ শুকিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে হিমবাহ গলতে শুরু করেছে। এবার গবেষকেরা জানালেন, গত ২০ বছরে মহাসাগরের রং-ও বদলে গেছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফি সেন্টার এবং যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গবেষকেরা বলেছেন, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে বিশ্বের ৫৬% এরও বেশি মহাসাগরের রঙ হালকা সবুজাভ হতে শুরু করেছে। বুধবার নেচার জার্নালে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে মহাসাগরের যে সম্মিলিত আয়তন তার অর্ধেকেরও বেশিজুড়ে রং পরিবর্তনের এই প্রবণতা খেয়াল করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এর মোট আয়তন পৃথিবীর সম্মিলিত স্থলভাগের চেয়ে বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহাসাগরের রং বদলে যাওয়ার প্রবণতা বাস্তুতন্ত্রের জন্য হুমকি। এটা বাস্তুতন্ত্রের প্রক্রিয়াকে বদলে দিতে পারে। বিশেষত প্রাকৃতিকভাবে সামুদ্রিক খাদ্য উৎপাদনের কেন্দ্রে থাকা ছোট ছোট উদ্ভিদের জন্য এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান লেখক ও যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ওশোনগ্রাফি সেন্টারের গবেষক বি বি কায়েল বলেন, ‘মহাকাশ থেকে মহাসাগরের রং দেখে সেখানকার জীববৈচিত্র্যের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তাই রং বদলে যাওয়া মানে হলো, মহাসাগরের জীববৈচিত্র্য বদলে যাচ্ছে। এ কারণে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।’
নীল মহাসাগর হালকা সবুজাভ হতে শুরুর পেছনে প্রকৃত কারণ খোঁজা এবং এর সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে জানার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এমআইটির আর্থ, অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড প্ল্যানেটরি বিভাগের গবেষক স্টেফানি ডাতকিউইচ বলেন, মহাসাগরের রং বদলে যাওয়ার ঘটনা বাস্তবে দেখতে পাওয়া আশ্চর্যজনক নয়, বরং ভীতিকর ঘটনা। এটা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে মানবসৃষ্ট কারণগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু প্রকৃতির পরিবর্তনই না মানুষের মস্তিষ্কের আকারও ছোট হতে শুরু করেছে। ক্যালিফোর্নিয়ার ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের স্নায়ু বিজ্ঞানী জেফ মর্গান স্টিবেলের করা এক গবেষণায় সম্প্রতি এই তথ্য উঠে আসে।
তিনি গবেষণায় দেখান, বৈশ্বিক উষ্ণতা, আর্দ্রতা ও বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনে গত ৫০ হাজার বছরের বিভিন্ন সময়ের হোমো গণ এর ২৯৮টি নমুনার পরিবর্তন বুঝতে পরীক্ষাটি করা হয়েছে। শীতল সময়ের তুলনায় উত্তপ্ত জলবায়ুর সময়ে মানব মস্তিষ্কের গড় আকার উল্লেখযোগ্যভাবে কম।