জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে নেপালে বরফের বন্যা
নেপালে হিমালয় পর্বতাঞ্চলে বরফের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শেরপাদের একটি গ্রাম। হিমবাহ গলা বরফ শীতল স্রোতে রবিবার (১৮ আগস্ট) এভারেস্টের নিকটবর্তী গ্রামটি প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গ্লেসিয়ার বা হিমবাহের একটি হ্রদের তীর ভেঙে যাওয়ার কারণে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত থামে অঞ্চলটিতে এই আকস্মিক বরফের বন্যা হয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হিমালয়ের অনেক হিমবাহ আশঙ্কাজনক হারে গলে যাচ্ছে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে আসছেন।
বন্যায় এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাড়ি, স্কুল এবং একটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকসহ এক ডজনেরও বেশি ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। থামে অঞ্চলটি অনেক বিশ্ব রেকর্ডধারী শেরপার আবাসস্থল। এ তালিকায় আছেন অভিযাত্রী এডমন্ড হিলারির সঙ্গে মাউন্ট এভারেস্টে আরোহণকারী প্রথম ব্যক্তি শেরপা তেনজিং নোরগে।
বন্যার ভিডিওতে দেখা গেছে যে, হিমালয়ের গ্রামটির মধ্য দিয়ে ফেনাযুক্ত, দুধের মতো সাদা বরফগলা পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে এবং কাদার সঙ্গে মিশে বাদামী রং ধারণ করছে।
নেপালের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র গৌরব কুমার কেসি জানান, হিমবাহের এই বন্যায় প্রায় ১৫টি বাড়ি ভেসে গেছে। উদ্ধারকারী দলগুলো মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহারের অনুমতি মেলেনি। শনিবার সকালে গ্রামটির আশপাশে টহল দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
বন্যার কারণ জানা না গেলেও, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্টের (আইসিআইএমওডি) জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অরুণ ভক্ত শ্রেষ্ঠ বলেছেন, এ ঘটনায় হিমবাহের হ্রদ ফেটে যাওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে।
আইসিআইএমওডি ২০২০-এর প্রতিবেদন অনুসারে, নেপালে গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ ধসের ২ হাজার ৭০টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে ২১টিকে বিপজ্জনক হিসেবে ধরা হয়েছে।