মোঃ রাজিবুল ইসলাম (রাজিব): গত কয়েকদিনের কালবৈশাখীর ঝড়, বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে বোরো ধান তলিয়ে গিয়েছে। অনেক স্থানে কোমর সমান পানিতে নৌকা নিয়ে ধান কাটতে দেখা গিয়েছে। যদিও ধান তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা দেশের বেশি অঞ্চলে ঘটেনি। ধান তলিয়ে গিয়েছে হাওর অঞ্চলে। কিন্তু যে সকল অঞ্চল বা এলাকায় ঝড়ের সাথে সাথে শিলাবৃষ্টি হয়েছে সে সকল এলাকায় ধানের ক্ষতি হয়েছে অনেক। আগে যে ধানের শীষগুলো ধানের ওজনে নিচের দিকে ঝুঁকে ছিলো সেই ধানের শীষ এখন সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে। ধানের শীষের সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকা থেকেই বোঝা যায় কতটা ধান ঝড়ে গেছে।
গত বৃহস্প্রতি ও শুক্রবারের কালবৈশাখী ঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টি হওয়ার কারণে নড়াইলের অনেক জমির ধান ঝড়ে গিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে জমিতে ধান পড়ে আছে। কিছু কিছু জমির ধান আগামী ৭ দিনের মধ্যে কাটার সম্ভাবনা ছিলো। আবার কিছু কিছু জমির ধান ১০ দিন পরেই কাটা হতো। কিন্তু শিলাবৃষ্টির কারণে সেই সকল জমির অধিকাংশ ধান ঝড়ে গেছে।
নড়াইলের কালিয়া থানাধীন ১ নং বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কৃষক মোঃ মঞ্জুর হোসেন মোল্যা গ্রীনপেজের প্রতিনিধিকে বলেন, কিছু কিছু জমির ধান প্রায় অর্ধেক ঝড়ে গেছে। আবার কিছু কিছু জমির ধান চার ভাগের একভাগ ঝড়েছে। অন্যান্য জমির ধানের মধ্যে আট ভাগের ১ ভাগ ধান ঝড়ে গেছে। তিনি আরো জানান, ঝড় ও বৃষ্টিতে শুধু যে ধানের ক্ষতি হয়েছে এটা বলা ভুল হবে কারণ ধানের সাথে সাথে পাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পাটের জমিতে পানি জমে থাকায় পাট গাছ মারা গিয়েছে। অনেক জমির পাট মাটির সাথে মিশে আছে। কিছু কিছু জমির পাট মাঝামাঝি স্থান থেকে ভেঙ্গে গেছে। সব মিলিয়ে এবার অনেক ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন করে জমি চাষ করেন। কিন্তু ফসলের ক্ষতি হওয়ায় লোনের টাকা পরিশোধ করতে অনেক কষ্ট হবে।

অন্যান্য বছরের তুলনায় কৃষক এবছর ধানের দাম ভালো পাচ্ছে। ধানের দাম থাকায় খুশি কৃষক। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসায় ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সারা দেশে। একই সাথে বিশ্বে এখন করোনা মহামারীতে অচল হয়ে আছে। করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে ধান ঘরে তোলা নিয়ে অনেক চিন্তিত আছে কৃষক। যদিও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন কৃষকের ধান ঘরে তোলায় বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোহিতা করছে। অন্যদিকে সরকারও কৃষকের ধান ঘরে তোলার জন্য গ্রহণ করেছে বিভিন্ন কর্মসূচি।