টেকসই উন্নয়নের জন্য কৃষি, প্রাণবৈচিত্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তার সমন্বয় প্রয়োজন: রিজওয়ানা হাসান
ঢাকায় অনুষ্ঠিত “কৃষি উৎপাদন ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্মেলন”-এ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, কৃষি, প্রাণবৈচিত্র্য এবং খাদ্য নিরাপত্তার সমন্বয় ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি উন্নয়নের নামে পরিবেশ ধ্বংসের প্রবণতাকে অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেন এবং পরিবেশ বিষয়ক দৃষ্টিভঙ্গিকে উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কৃষকের স্বার্থ রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণ একযোগে করতে হবে। উন্নয়ন মানেই পরিবেশের ক্ষতি—এই প্রচলিত মানসিকতা বদলানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।
একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, শিল্প খাতে কর্মসংস্থান রক্ষার দোহাই দিয়ে নদী ও বিশুদ্ধ পানির ওপর নির্ভরশীল কোটি কোটি মানুষের জীবিকা উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে, যা একটি বড় বৈপরীত্য।
তিনি উর্বর কৃষিজমি অবৈধভাবে ইটভাটায় ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একে পরিবেশ দস্যুতা হিসেবে আখ্যা দেন। এ বিষয়ে আইন প্রণয়নের জন্য সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
রিজওয়ানা হাসান জৈব কৃষির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে একটি আত্মনির্ভরশীল কৃষি মডেলের দিকে অগ্রসর হওয়ার তাগিদ দেন, বহুজাতিক কোম্পানির চাপে নয়।
তিনি ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ভোগের ধরণ পরিবর্তনের আহ্বান জানান, বিশেষ করে অপ্রয়োজনীয় এসি ব্যবহারের মতো অতিরিক্ত ভোগ পরিবেশের ওপর চাপ তৈরি করে। তিনি মধুপুরে একটি বন পুনরুদ্ধার প্রকল্পের সূচনার কথাও ঘোষণা করেন, যার মাধ্যমে স্থানীয় প্রজাতির গাছপালা পুনরায় স্থাপন করা হবে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদসহ বিভিন্ন শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। এতে কৃষি বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবিদ এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।