32 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৯:৫৭ | ১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
দখল-দূষণে মরে যাচ্ছে শ্যামাসুন্দরী খাল
পরিবেশ দূষণ

দখল-দূষণে মরে যাচ্ছে শ্যামাসুন্দরী খাল

দখল-দূষণে মরে যাচ্ছে শ্যামাসুন্দরী খাল

রংপুর নগরীর ফুসফুস বলে খ্যাত শ্যামাসুন্দরী খাল। এর গভীরতা ছিল ৪০ ফুটের বেশি। দীর্ঘদিন ধরে দখল-দূষণ, গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই খাল ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যে খালটি পরিবেশ রক্ষার জন্য খনন করা হয়েছিল, তা এখন পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কয়েক বছর আগেও নগরীর সব পানি এই খালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খোকসা ঘাঘট নদীতে গিয়ে পড়তো। এখন মৃতপ্রায় এই খাল। পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটু বৃষ্টিতেই নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।



এই পানি নামতে সময় লাগে দুই-তিন দিন। ফলে ২০ লাখ নগরবাসী দুর্ভোগের শিকার হন। খালটি মরে গেলে ভবিষ্যতে দীর্ঘস্থায়ী ও মারাত্মক জলাবদ্ধতার কবলে পড়বেন নগরীর বাসিন্দারা।

এ অবস্থায় রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা শ্যামাসুন্দরী খাল রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা চেয়েছেন।

শ্যামাসুন্দরী খাল ও তিস্তা নদী নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান (তুহিন ওয়াদুদ)। ভবিষ্যতে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কবলে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন,

‘শ্যামাসুন্দরী খাল হলো রংপুর নগরীর পানি নিষ্কাশনের একমাত্র স্থান। এটি এখন ময়লার ভাগাড়। দিন দিন দখল হচ্ছে খালের জায়গা। বাসাবাড়ির বর্জ্য খালে পড়ছে। পুনরায় খনন করে পানিপ্রবাহ বাড়ানো না গেলে বছরজুড়ে নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে।’

স্থানীয় ইতিহাসবিদদের তথ্যমতে, ১৯ শতকের শেষের দিকে মশাবাহী ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণে রংপুরে অনেক লোক মারা যান। এর মধ্যে ছিলেন রংপুরের মহারানি শ্যামাসুন্দরী।

মৃত্যুর পর তার ছেলে রাজা জানকী বল্লব মশার প্রজনন মোকাবিলায় রংপুর শহরে একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন। খালটি খনন করে তার মায়ের নামে নামকরণ করেন। সেই থেকেই খালটি শ্যামাসুন্দরী নামে পরিচিত।



স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালটি ১৮৯০ সালে খনন করা হয়। প্রথমে ৬০ থেকে ১০০ ফুট চওড়া হলেও এখন এটি নালায় পরিণত হয়েছে। এর পানি কালো হয়ে গেছে। সঙ্গে তীব্র দুর্গন্ধ। খালের কোথাও কোথাও ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে আছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, রংপুরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কেল্লাবন্দ এলাকায় ঘাঘট নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে পশারীপাড়া, কেরানীপাড়া, মুন্সিপাড়া, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, পালপাড়া, গোমস্তাপাড়া, সেনপাড়া, তেতুলতলা, মুলাটোল, বৈরাগীপাড়াসহ ৩৩টি ওয়ার্ডের ১৪টির বিভিন্ন স্থানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খালটি খোকসা ঘাঘট নদীতে পড়েছে। এটি রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ এলাকায় কেডি খালের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯-১০ সালে খালটির কিছু অংশ পুনরায় খনন করা হয়। কিন্তু পরবর্তী সমেয় খালের বিভিন্ন জায়গা দখল হয়ে যায়। সেইসঙ্গে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও শহরের বর্জ্য খালে ফেলা শুরু হয়। এসব ময়লা-আবর্জনা খালটিকে ভাগাড়ে পরিণত করেছে।

খালের আশপাশের বাসিন্দারা বলছেন, খালের দুই পাশে বেশিরভাগ বাসার ল্যাট্রিনের লাইন দেওয়া। বাসাবাড়ির বর্জ্য গিয়ে খালে পড়ছে। এতে পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। পুরো খাল নালায় পরিণত হয়েছে।

বেশিরভাগ স্থান ভরাট হয়ে গেছে। যেসব স্থান ভরাট হয়নি, সেখানের গভীরতা ৫-৭ ফুটে নেমেছে। এখন এটি নগরবাসীর জন্য অভিশাপ। কারণ খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টিতে নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বাড়িঘরে পানি ঢোকে। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। খালটি পুনরায় খনন ও দখলমুক্ত করা ছাড়া উপায় নেই।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত