নরওয়ে বন উজাড়ের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করেছে
নরওয়েতে আর একটিও গাছ কর্তণ করা হবে না এবং বন উজাড়ের সাথে সংশিষ্ট দ্রব্যাদি ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
কোন সন্দেহ নাই যে, আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাত্রা কাঠের সাথে মিশে আছে। কাঠ ছাড়া আমরা চলতেই পারিনা, যেমন আসবাবপত্র, ঘর-বাড়ী নির্মাণ, কাগজ তৈরী ইত্যাদি হরেক রকমের পণ্যের সাথে কাঠের ব্যবহার জড়িত।
কিন্তু এ কাঠ আসে গাছ কর্তণের ফলে, আর গাছ আমাদের নিশ্বাসের অক্সিজেন তৈরী করে এবং প্রশ্বাসের সাথে বের হয়ে যাওয়া কার্বণ ডাই-অক্সাইড খাদ্যরূপে গ্রহন করত: এ পৃথিবীকে মানষের বাসযোগ্য রাখছে।
কাঠের ব্যবহার যতই বাড়ছে, পৃথিবীতে ততই গাছ কাটা পড়ছে। কাঠের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারনে গ্রীষ্মমন্ডলীয় বৃহৎ বৃহৎ বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে।
যার ফলে ভূ-পৃষ্ঠ দিন দিন উতপ্ত হচ্ছে, সমূদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে – এর কারণে বাংলাদেশসহ এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার বহু উপকূলীয় অঞ্চল এবং সোলেয়মান দ্বীপুঞ্জসহ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অসংখ্য দ্বীপাঞ্চল সমূদ্রের বক্ষে তলিয়ে যাচ্ছে।
উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে দেশে দেশে উপর্যোপুরি বন্যা, খড়া, জ্বলোচ্ছাস, ভূমিধস, দাবাদাহের মত প্রাকৃতিক দূর্যোগ লেগেই আছে এবং ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবেশের বিপর্যয়ের ফলে পৃথিবী নামক এই গ্রহটি মানুষসহ সকল প্রানীর অস্তিত্ব আজ হুমকীর সম্মূঙ্খীন।
বন উজাড়ের প্রথম সারির দেশগুলো হল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং পাপুয়া নিউগিনি। আমাদের ব্যবহার্য এসব কাঠ যেগুলো একদিন মিলিয়ন মিলিয়ন জীবের বাসস্থান ছিল – সেগুলো এখন অতিত ইতিহাস।

এমনি এক সময় বিশ্বের কিছু সংবাদ প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে স্বস্তি হিসাবে দেখা দিয়েছে। নরওয়ের সরকার সম্প্রতি ঘোষনা দিয়েছে যে, তার সরকার এমন কোন পণ্য ক্রয় করবেনা – যেগুলো গ্রীষ্মমন্ডলীয় বন উজাড়ের সাথে সম্পর্কিত।
এর অর্থ হল, যে সকল সংস্থা গাছ কেটে বা ধংস করে বন উজাড় করার সাথে সংশ্লিষ্ট – সে সকল সংস্থার দ্রব্যাদি ক্রয়ে বা সংস্থাসমূহের সাথে নরেজিয়ান সরকারের অধীনস্ত কোন দপ্তর কোন চুক্তি সম্পাদন করবে না।
গত কয়েক বছর যাবত বেশ কিছু বেসরকারী সংস্থা, কর্পোরেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বন উজাড়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং বন উজাড় দ্বারা তৈরী বা উৎপাদিত দ্রব্যাদি ব্যবহার বা ক্রয় না করার সিদ্বান্ত গ্রহন করলেও নরওয়ের পূর্বে কোন সরকারই রাষ্ট্রীয়ভাবে এরুপ প্রদক্ষেপ গ্রহন করেনি।
নরওয়ে এ ঘোষনা দেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও জার্মানীকেও অনুরুপ প্রতিশ্রুতি প্রদানের জন্য আহবান জানিছে। সর্বোপরি বিশে^র লক্ষ লক্ষ মানুষ বনে বাস করে, জীবনযাত্রায় বনের উপর নির্ভরশীল এবং বন হল পৃথিবীর “ফুসফুস” – যা রক্ষা করা সমগ্র মানব জাতীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। ভাগ্য গুনে নরওয়েই সঠিক পথে প্রথম পদক্ষেপ নিচ্ছে।
News Source: iflscience.com