নোনাপানিতে দ্রাব্য প্লাস্টিক তৈরি করলেন জাপানি বিজ্ঞানী
প্লাস্টিক নিয়ে কত না চিন্তা আমাদের! পরিবেশ সচেতন মানুষ যতই বারবার সতর্ক করুন, পরিবেশের স্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করে আমরা, আমজনতা অক্লেশে যে কোনও প্লাস্টিক তো ব্যবহার করেই থাকি। শুধু ব্যবহারই নয়, যত্রতত্র আমরা সেসব ফেলেও দি।
সেখান থেকে কী পরিমাণ দূষণ ছড়িয়ে শেষে আমাদেরই ক্ষতি হবে, তার আঁচ টের পাই না। বিশেষত সমুদ্রের পাড়ের প্লাস্টিক-চিত্র দেখলে শিউরে ওঠার জোগাড় হয়! এসব সমস্যা মেটাতে এবার অভিনব পন্থা বের করলেন জাপানি বিজ্ঞানীরা। এমন এক প্লাস্টিক তৈরি করলেন, যা নোনাপানিতে দ্রাব্য।
তাকুজা আইদা নামে জাপানি বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করেছে একটি টিম। এধরনের প্লাস্টিক তৈরির নেপথ্যে আসলে রয়েছে ‘সুপারমলিকিউল’-এর বিজ্ঞান। এর সাহায্যে নোনাপানিতে অতি সহজে দ্রাব্য হয়, এমন প্লাস্টিক তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
আইদা জানান, সুপারমলিকিউলের ভঙ্গুর ধর্ম প্লাস্টিককে দ্রুত পানিতে গুলে যেতে সাহায্য করেছে। আমরা সাধারণত যে উপাদানে তৈরি প্লাস্টিক ব্যবহার করি, এটা তার ঠিক বিপরীতধর্মী। নতুন প্লাস্টিক নোনাপানিতে ইলেকট্রোলাইটের ধর্মের সঙ্গে মিলে গিয়ে দ্রবীভূত হবে।
গবেষণার ফল থেকে জানা যাচ্ছে, পলিথিন অর্থাৎ পলিমারের বদলে দুটি ‘মনোমার’ এই প্লাস্টিকের অণুর প্রাথমিক উপাদান। সোডিয়াম হেক্সামেটাফসফেট, যা নোনাপানির অন্যতম উপাদান, তাতে এই মনোমারের অণু একটু একটু করে ভেঙে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে তা দ্রবীভূতও হয়।
সাধারণ প্লাস্টিকের অণু তার উপাদানের জন্যই কোনও পানিতে দ্রবীভূত হয় না। বরং পানিতে মিশে তা দূষণ তৈরি করে। সেই কারণেই সমুদ্র সৈকত, নদীর পাড়ে প্লাস্টিক থাকলে সেখান থেকে দূষণ ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু জাপানি বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ নতুন ধরনের প্লাস্টিক তার অণুর গঠনের জন্যই অন্তত নোনাপানিতে দ্রবীভূত হয়ে যাবে।যদি এ ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি সামগ্রীর ব্যবহার চালু হয়, তাহলে পরিবেশও বাঁচবে।