পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিকবিহীন একমাস পালনের উদ্যোগ
প্লাস্টিকমুক্ত জুলাই পালনের জন্য, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন -এসডো ১৪ জুলাই, ২০২৩ তারিখে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে দিনব্যাপী মোবাইল ক্যাম্পেইন আয়োজন করে।
প্লাস্টিক দূষণের অবসান ঘটানোর প্রয়োজনীয়তাকে উদ্দেশ্য করে, ‘প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এগিয়ে আসুন’-উক্ত সচেতনতা মূলক বার্তাটি প্রদানের মাধ্যমে কার্যকরীভাবে এই ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করা হয়েছে।
প্লাস্টিক মুক্ত জুলাই হল প্লাস্টিক ফ্রী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে একটি উদ্যোগ। এটি একটি বিশ্বব্যাপী আন্দোলন যার লক্ষ্য প্লাস্টিক বর্জ্যমুক্ত বিশ্ব তৈরি করা। ২০১১ সালে প্রথম এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছিল।
পুরস্কার বিজয়ী এই প্লাস্টিক মুক্ত জুলাই অভিযানটি কয়েক বছর ধরে আলোচনায় এসেছে, যা সাধারণ জনগণকে প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে, আমাদের মাটি, সমুদ্র এবং সম্প্রদায়কে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে উদ্বুদ্ধ করেছে ৷
মোবাইল ক্যাম্পেইনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রাঙ্গণে শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে প্লাস্টিকের ব্যবহার ও এর প্রভাব নিয়ে জনগণের মতামতও জানতে চাওয়া হয়।
বেশির ভাগ জনগণই এসডোর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং পরিবেশের ওপর প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধ করতে এবং এর বিকল্প পণ্যগুলো সহজলভ্য করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান।
দিনব্যাপী এই মোবাইল ক্যাম্পেইনে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিলো। যদিও অনেকেই প্রাথমিকভাবে গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি সম্পর্কে অবগত ছিল না, কিন্তু তাদেরকে এটি সম্পর্কে অবহিত করার পরে, চুক্তিটির প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে। ক্যাম্পেইনটি টিএসসি থেকে শুরু করে জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে হাতিরঝিল, গুলশান, সংসদ ভবন হয়ে, সবশেষে বিকাল ৫:৩০ এ ধানমণ্ডি লেকে এসে শেষ হয়।
প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থগুলো ফেলে দেওয়ার পর পরিবেশে ছড়িয়ে পরে। সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে জানা গেছে যে, ১৩ হাজারেরও বেশি রাসায়নিক পদার্থ প্লাস্টিক এবং প্লাস্টিক তৈরির সাথে বিভিন্নভাবে জড়িত আছে।
এসব ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থগুলো খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে। ফেব্রুয়ারী ২০২২-এ, জাতিসংঘের পরিবেশ পরিষদের (ইউনিয়া-৫.২) পঞ্চম অধিবেশন পুনরায় আরম্ভ হওয়ার পর, সামুদ্রিক পরিবেশে প্লাস্টিক দূষণের উপর একটি আন্তর্জাতিক আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নীতির তৈরির জন্য একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাবনা (৫/১৪) গৃহীত হয়েছিল।
যার জন্য ২০২৪ সাল শেষ হওয়ার পূর্বেই আলোচনা সম্পন্ন নিশ্চিত করতে হবে। আইনটি একটি বিস্তারিত পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে যা প্লাস্টিকের সম্পূর্ণ জীবনচক্রকে সম্বোধন করবে।
তৃতীয় ইন্টারগভার্নমেন্টাল নেগোসিয়েটিং কমিটি (আইএনসি-৩) এ পর্যালোচনার জন্য নতুন একটি চুক্তি “জিরো ড্রাফট” তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে আইএনসি-২ এর কর্মসূচি ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে।
প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে, গ্লোবাল প্লাস্টিক চুক্তি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করতে এবং প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করার প্রচেষ্টার জন্য তাদের সমর্থন পেতে, এসডো আজ একটি মোবাইল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে।