28 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ২:০৬ | ১২ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পরিবেশ রক্ষায় সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত করার ঘোষণা
পরিবেশ রক্ষা

পরিবেশ রক্ষায় সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত করার ঘোষণা

পরিবেশ রক্ষায় সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত করার ঘোষণা

ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত পর্যটক ও প্লাস্টিকে বিপর্যস্ত দেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দ্বীপ সেন্টমার্টিন। প্লাস্টিক সমুদ্র দূষণ ও এই দ্বীপের নৌন্দর্য নষ্ট করার পাশাপাশি ধ্বংস করছে সেখানকার জীববৈচিত্র্যও। তাই এই দ্বীপে পর্যটক আগমন নিষিদ্ধের পরামর্শও উঠে এসেছে বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে।

তবে সম্প্রতি সেন্টমার্টিন দ্বীপের পর্যটন বিষয়ে নতুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এতে সেন্টমার্টিনে ঢুকতে পর্যটকদের আগাম রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা, পর্যটকের সংখ্যা কমানো, যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বেশ কিছু বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে নতুন প্রকল্প নিয়েছে ক্লাইমেট পাল্টামেন্ট সদস্যদের সংগঠন দ্যা আর্থ ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। সংস্থাটি বলছে, আগামী ২ বছরেই এই দ্বীপকে প্লাস্টিকমুক্ত করবে তারা।

শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত একটি কৌশলগত অধিবেশনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। পরে এ বিষয়ে নানান মতামত তুলে ধরেন সংশ্লিষ্টরা।



এতে বলা হয়, সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে প্রথমে পচনশীল ও অপনশীল বর্জ্যগুলোকে আলাদা করতে আলাদা বিন ব্যবহার শুরু করবে। যার মাধ্যমে অপনশীল বর্জ্য অর্থাৎ প্লাস্টিক আলাদা হয়ে যাবে।

সেই প্লাস্টিক সেন্টমার্টিন থেকে সরিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিক মুক্ত করবেন তারা। সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিক মুক্ত দেখতে স্থানীয়রাও এই প্রকল্পে সহযোগিতা করছে বলে জানায় দ্য আর্থ।

এর আগে সকালে ‘প্লাস্টিক ফ্রি সেইন্টমার্টিন’ এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। এ সময় তিনি বলেন, সেন্টমার্টিনকে প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি।

আগামীতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকেও প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকারের সব পরিকল্পনা যথাযথ বাস্তবায়ন করা হবে। এর জন্য আমরা সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করব। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে এর একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

পরে কৌশলগত অধিবেশনে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) সভাপতি শিবুল আজম কোরেশী বলেন, যে কোনো পরিকল্পনা অবশ্যই বাস্তবায়নযোগ্য কিনা সেটি ভেবে গ্রহণ করতে হবে। ১৯৯৬ সালে সেন্টমার্টিনকে ইসিএ ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন সেখানে মাত্র একটি হোটেল ছিল।

ইসিএ অনুযায়ী এখানে আর একটি ভবনও ওঠার কথা ছিল না। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিলেও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি, এখন সেখানে আড়াইশোর বেশি হোটেল আছে। তাই আমরা চাই বাস্তবায়নযোগ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

প্লাস্টিক বর্জ্য অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যত্রতত্র ময়লা ফেলা বন্ধে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ও ট্যুরিস্টদের বাধ্য করতে হবে। প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করতে হবে।



তিনি বলেন, শুধু বিন দিলেই প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ হবে না। দেখা যাবে বিন ভরে আছে পরিষ্কার করার কেউ নেই। এজন্য একটি সমন্বিত উদ্যোগ লাগবে। পচনশীল বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য ৩০ রুমের বেশি বড় হোটেলগুলোকে বায়োগ্যাস প্লান্ট করতে বাধ্য করা যেতে পারে।

ছোট হোটেলগুলোও তাদের বর্জ্য দিবে। এর মাধ্যমে বায়োগ্যাস বা বায়ো বিদ্যুৎও তৈরি হবে, বর্জ্য সমস্যাও কমবে। আর প্লাস্টিক রিসাইকেলের ব্যবস্থা করতে হবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, আমরা বর্জ্যমুক্ত সেন্টমার্টিন করতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটি ডাম্পিং স্টেশন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবখানে ঘুরেছি জায়গা পাইনি। এখন করতে হলে জমি কিনে করতে হবে, কিন্তু ট্যুরিজম বোর্ডে বাজেটে সেটি করা সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সাবেক সিইও জাবেদ আহমেদ বলেন, সেন্টমার্টিন এখন একটি মৃত দ্বীপ বলা যেতে পারে। আমরা ধারণক্ষমতার অধিক টুরিস্ট নিয়ে এটিকে মেরে ফেলেছি।

সেন্টমার্টিনকে বাঁচানোর উদ্যোগের চেয়েও আমাদের এখন বিকল্পকে তুলে ধরতে বেশি মনযোগি হওয়া দরকার। আমি মনে করি, সোনাদিয়া দ্বীপ সেন্টমার্টিনের চেয়ে কম আকর্ষণীয় নয়। ট্যুরিস্টদেরকে সেটাতেও আকৃষ্ট করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ডাম্পিং স্টেশনের জন্য সরকার চাইলে জায়গা পাওয়া যাবে না আমি এটা বিশ্বাস করি না। টাকা খরচ করলে অবশ্যই করা যাবে। কক্সবাজারে বহু এনজিও কাজ করে।



আমরা চাইলে তাদের দিয়েই এটা করতে পারতাম। আমরা যদি উন্নয়ন সহযোগিদের বলতাম যে, কক্সবাজারে কাজ করতে হলে আগে সিইটিপি বা ওয়েস্ট মেনেজমেন্ট সিস্টেম নির্মাণ করে দিতে হবে।

এটা তাদের মেন্ডেটে আছে। কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে চাইতে পারিনি বলে পরিবেশ ব্যবস্থাপনার জন্য পাওয়া বরাদ্দ তারা ফাইভ স্টার হোটেলে সভা সেমিনার করে শেষ করে দেয়। আমাদের একটি সমন্বিত পরিকল্পনা থাকলে অবশ্যই এটা এতদিনে করে ফেলা যেত।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা সমন্বয়ের অভাব। আমাদেরকে সমন্বয়ের জন্য একটা সেল করা দরকার। আর ট্যুরিস্টদের থেকেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যয় নিয়ে নেওয়া দরকার।

প্রতিটি প্লাস্টিক পণ্যের জন্য প্লেন ল্যান্ডের তুলনায় বেশি দাম নির্ধারণ করা এবং বর্জ্য জমা দিলে সেই দাম ছাড় দেওয়ার পদ্ধতি চালুরও পরামর্শ দেন তিনি।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত