পরিবেশ সূচকে তলানিতে ভারত
তীব্র গরমে জেরবার বাংলা। বাড়ি যেন অগ্নিকুণ্ড। আর বাইরে বেরলেই চাঁদিফাটা রোদ্দুরের বেয়াদপি। গরম হাওয়ার হলকা যেন চাবুক মারছে চোখে-মুখে। এক আঘাতেই কেড়ে নিচ্ছে শরীরের সমস্ত প্রাণশক্তি।
কিন্তু কেন এই অস্বাভাবিক গরম? কোন কারণে প্রতি বছর উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে দহন-জ্বালা? তাপমাত্রার এই বেয়াড়া বাড়বাড়ন্তের প্রকৃত ‘ভিলেন’ ঠিক কে?
উত্তর হল বিশ্ব উষ্ণায়ন। এবং তার জেরে জলবায়ুর পরিবর্তন। এরই কুফল নিরন্তর ভোগ করে চলেছি আমরা। কখনও বেশি, কখনও কম। এইটুকু প্রায় সকলেরই জানা। ইতিপূর্বে অগুনতিবার চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ এবং ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’। তবে যেটা নিয়ে আলোচনা-বিশ্লেষণ সেভাবে এখনও হয়নি তা হল, নেপথ্যের অন্যতম প্রধান একটি কারণ। প্লাস্টিক-দূষণ।
পরিবেশ সূচকে (এনভায়রনমেন্ট পারফরম্যান্স ইন্ডেক্স)-এ ভারতের স্থান সবচেয়ে নিচে। ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতবর্ষ রয়েছে ১৮০ নম্বরেই। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এমনকী জাম্বিয়া, ইথিওপিয়া, ইরাক, সুদানও ভারতের থেকে এগিয়ে।
রাষ্ট্রসংঘের নথি বলছে, বিশ্বে বছরে ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে অন্তত ৫০ শতাংশ ‘সিঙ্গল-ইউজ’ প্লাস্টিক। মাত্র ১০ শতাংশই ‘রিসাইকল’ করা যায় অর্থাৎ পুনর্ব্যবহারযোগ্য।
প্লাস্টিক-বর্জ্য নদী-পুকুর এমনকী সমুদ্রের তলদেশে জমে জমে জলজ প্রাণীকুলের বংশ ক্রমেই ধ্বংস করে চলেছে। শুধু সমুদ্রের অতল কেন! পৃথিবীর সর্বোচ্চ স্থান মাউন্ট এভারেস্টও এর হাত থেকে বাঁচেনি।
সমীক্ষা জানাচ্ছে, ধীরে ধীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক মানব শরীরে জমছে। যার ফলশ্রুতি নানা ধরনের জটিল রোগ। ভারতে প্রতি বছর প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে বিবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নিয়ম-নীতিও জারি করা হয়। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও এটা স্পষ্ট যে, আমরা যে তিমিরে ছিলাম, সেই তিমিরেই রয়েছি।