পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে অভিযান আরও কঠোর করা হবে
পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহার বন্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদার হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ ও এনটিএমসি) নাসির-উদ-দৌলা। প্রাথমিকভাবে সুপার শপে যেসব পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর উৎপাদন বন্ধ করা হবে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নাসির-উদ দৌলা। দেশে পলিথিনের শপিং ব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার লক্ষ্যে এ সভা হয়।
সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্লাস্টিক প্যাকেজিং রোল ম্যানুফ্যাকচারার্স ওনার্স অ্যান্ড ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি ও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সভা শেষে নাসির-উদ দৌলা বলেন,পলিথিনের শপিং ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ কীভাবে কার্যকর করা যায় এবং এ–সংক্রান্ত অভিযান কীভাবে আরও জোরদার করা যায়, এ বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
পলিথিন বন্ধ করার ক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি জনগণ ও বিভিন্ন অংশীজনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে উল্লেখ করে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চান।
অতিরিক্ত সচিব (পুলিশ ও এনটিএমসি) বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের সুপার শপগুলোয় যে পলিথিন শপিং ব্যাগগুলো ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর উৎপাদন বন্ধ করা হবে।
বাজারে যেসব পলিথিনের শপিং ব্যাগ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ কার্যকর করা হবে। পর্যায়ক্রমে পলিথিনের অন্যান্য পণ্যও বন্ধ করা হবে।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণ) তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, পলিথিনের বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
এ ছাড়া বেসরকারিভাবেও বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ উৎপাদিত হচ্ছে। তিনি বলেন, পলিথিন ব্যাগের উৎপাদনকারী, রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সরকারের নির্দেশনা পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন বা পলিপ্রপিলিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। আর ১ নভেম্বর থেকে সারা দেশে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে অভিযান চলছে। নিষিদ্ধ পলিথিন ও পলিপ্রপিলিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, মজুত, পরিবহন, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধের কার্যক্রম কঠোরভাবে বাস্তবায়নে এ সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
২০০২ সালে ১ মার্চ আইন করে বিষাক্ত পলিথিন উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ। তবে দেশে পলিথিনের ব্যবহার কমেনি বরং দুই দশকের বেশি সময় ধরে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়তে দেখা গেছে। এরপর সরকার ২০১০ সালে আরেকটি আইন করে, কিন্তু এই আইনও বাস্তবে কোনো কাজ দেয়নি।