বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) এর বিবৃতি
বিগত দিনে তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসার দাবীদার। যা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তুলছে। কিন্তু সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি এমন কিছু সংবাদ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, একদিকে সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের চেষ্টা করছে অপরদিকে, শ্রম আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোকে নানাভাবে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুসারে, অতীতে তামাক কোম্পানিগুলো বিভিন্ন সময়ে আইন লঙ্ঘন করে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে এবং বর্তমানেও নিচ্ছে। শ্রম আইন অনুসারে লভ্যাংশের একটি অংশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে প্রদান করা বাধ্যতামূলক হলেও তামাক কোম্পানিগুলো এ বিষয়টিকে গণমাধ্যমে এমনভাবে ফলাও করে প্রচার করছে যেন মনে হয় আইনগতভাবে বাধ্য হয়ে নয় বরং সরকারকে তারা বিশেষ কোন অনুদান প্রদান করছে। এধরনের বিভ্রান্তকর প্রচারণার প্রভাবে তামাক কোম্পানিগুলো বারবার আইন লঙ্ঘন করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে আরো আইন লঙ্ঘনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাসে বাংলাদেশ সংবিধান এবং হাইকোর্ট এর রায় বাস্তবায়নে সরকার যখন বদ্ধপরিকর থাকার কথা সে সময়, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)দেশেরপ্তানিমুখী সিগারেট উৎপাদন কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে সিঙ্গাপুর ও ভারতের মালিকানাধীন অ্যালাইড টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। যা সরকারের স্বাস্থ্যনীতি ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-এর সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ঘোষিত লক্ষ্যের পরিপন্থী।
এধরনের জনস্বাস্থ্য বিরোধী ঘটনাগুলোতে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। জোট মনে করছে এগুলো সুস্পষ্টভাবে তামাক কোম্পানির প্রভাবের ফলাফল। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আরো মনে করে, স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্ন্তজাতিক চুক্তি ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের নৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকার পরও দেশে নতুন করে আরো তামাক কোম্পানি স্থাপনের জন্য অনুমোদন প্রদান এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোকে নানাভাবে সুবিধা দেওয়া জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সরকারের ইতিবাচক প্রতিশ্রুতির সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) অ্যালাইড টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডের সাথে চুক্তি বাতিল , ভবিষ্যতে নতুন কোনো তামাক কোম্পানিকে অনুমোদন না দেওয়া এবং আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোকে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছে।
আন্তরিক ধন্যবাদসহ
সৈয়দা অনন্যা রহমান
সচিবালয়, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট