মাতুয়াইলে ব্যাটারি পুড়িয়ে বের করা হয় সিসা, ক্ষতির মুখে পরিবেশ
গ্রীন মডেল টাউনের দক্ষিণ পাশে অবস্থান মাতুয়াইল ময়লা ডাম্পিং। এখানে ঢাকা শহরের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সমস্ত ময়লা ডাম্পিং করা হয় যার তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ট গ্রীন মডেল টাউনবাসী। এর সঙ্গে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে উক্ত ডাম্পিংয়ে পুরোনো ব্যাটারি পোড়ানোর বিষাক্ত ধোঁয়া ও মিথেন গ্যাস ।
সরেজমিনে দেখা যায়, এখানে যানবাহনের পুরোনো ব্যাটারি এনে স্তূপ করা হয়। রাতের বেলায় এসব ব্যাটারি পুড়িয়ে বের করা হয় সিসা। পরে ব্যাটারির ভাঙা অংশ ও অ্যাসিড আশপাশের এলাকায় ফেলা হয়।
জানা যায়, মাতুয়াইল ডাম্পিং-এ এমন অনেকগুলো সিসা তৈরির কারখানা বানিয়েছেন অসাধু কিছু ব্যবসায়ী। উক্ত কারখানাগুলোতে রাত ১০টার দিকে ব্যাটারি পুড়িয়ে সিসা বের করার কাজ শুরু হয় এবং ভোর ৫ টায় পোড়ানো বন্ধ হয়। এরপর ট্রাকে করে সিসা নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, ব্যাটারি পোড়ানোয় এলাকায় বিশেষ করে গ্রীন মডেল টাউনে মারাত্মক ক্ষতিকর দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। কালো ধোঁয়া ও ছাইয়ে এলাকার গাছপালা, লতাপাতা কালো বর্ণ ধারণ করেছে। আশাপাশের জমির ফসল ও সবুজ ঘাস কালচে রং ধারণ করেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ভাষ্য, এই ব্যাটারি পোড়ানো ধোঁয়া মানব ও প্রাণিদেহ এবং উদ্ভিদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। যেকারণে গ্রীন মডেল টাউনবাসীও দিন দিন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।
তবে, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কাউকে ম্যানেজ করে বা কোনভাবে ব্যাটারি পোড়ানোর কারখানা স্থাপন করেছেন। সেখানে অনেক চুলা বসিয়েছেন। এইসব চুলায় ব্যাটারি পোড়ানো হয়।
সেখানেই যানবাহনের অনেক অকেজো ব্যাটারি স্তূপ করে রাখা হয়েছে। ব্যাটারি ভেঙে সিসা বের করে পানি ও এসিড আশপাশে ফেলে দেওয়া হয়। রাতে ব্যাটারি পোড়ানো হয়, দিনের আলো ফোটার আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
অনদিকে, ব্যাটারি পোড়ানোর সময় ওই আগুন প্রায় ৩০ ফুট উপরে ওঠে। কালো ধোঁয়ায় গোটা গ্রীন মডেল টাউন এলাকা আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বাতাস যেদিকে প্রবাহিত হয় সেদিকেই দুর্গন্ধ ছড়ায়।
ব্যাটারি পোড়ানোর ধোঁয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট, ফুসফুস ক্যান্সারসহ শরীরে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়। ওই কারখানার আশপাশে উৎপাদিত শাক-সবজি খেলে মানবদেহে বিষক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। গরু ছাগল ওই এলাকার ঘাস, লতা-পাতা খেলে বিষক্রিয়ায় মারাও যেতে পারে।