মেরু ভল্লুক: আর্কটিক খাদ্য শৃঙ্খল বা ফুড চেইনের প্রধান সরবরাহকারী ইঞ্জিন
ওইকোসে প্রকাশিত নতুন গবেষণা বলছে—প্রতি বছর ভল্লুকের ফেলে-যাওয়া শিকার থেকে লক্ষ লক্ষ কেজি খাবার পায় শিয়াল-পাখিসহ বহু প্রজাতি; সমুদ্র-বরফই এই শক্তি প্রবাহের সেতু।
২৮ অক্টোবর ২০২৫ — ইউনিভার্সিটি অব ম্যানিটোবা ও সান ডিয়েগো জু ওয়াইল্ডলাইফ অ্যালায়েন্সের গবেষকদের নেতৃত্বে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেরু ভল্লুকরা সীল শিকার করে যে অংশ অবশিষ্ট রাখে, তা বছরে মিলিয়ন কেজি “ক্যারিয়ন” (মৃতদেহের অবশিষ্টাংশ) হিসেবে আর্কটিকের বিস্তৃত স্ক্যাভেঞ্জার নেটওয়ার্ককে খাওয়ায়।
অন্তত ১১টি মেরুদণ্ডী প্রজাতি নিশ্চিতভাবে এ সুবিধা পায়—যার মধ্যে আছে আর্কটিক শিয়াল ও কাক/রেভেন—এবং অতিরিক্ত ৮টি প্রজাতি সম্ভাব্যভাবে নির্ভরশীল। গবেষকেরা দেখিয়েছেন, সমুদ্র-বরফের উপর শিকার টেনে এনে ভল্লুকরা সমুদ্র থেকে বরফ-পৃষ্ঠায় শক্তি স্থানান্তর করে, যা অন্য প্রাণীদের নাগালে আসে—এই অনন্য শিকার-রীতির কার্যকর বিকল্প অন্য কোনো প্রজাতি দিচ্ছে না।
গবেষণাটি আরও সতর্ক করেছে: কিছু উপ-জনসংখ্যায় ভল্লুক কমে যাওয়ায় ইতোমধ্যে প্রতি বছর ৩০০ টনের বেশি খাদ্য উৎস স্ক্যাভেঞ্জারদের হাতছাড়া হচ্ছে। অর্থাৎ ভল্লুকের সংখ্যা ও সমুদ্র-বরফ কমলে শুধু ভল্লুক নয়, তাদের ওপর নির্ভরশীল শিয়াল-পাখি-অন্যান্য প্রজাতিও খাদ্য ঘাটতির ঝুঁকিতে পড়বে।
কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ
-
খাদ্যজালের সেতুবন্ধন: ভল্লুকের শিকার-অবশিষ্ট আর্কটিকের কম-উৎপাদনশীল পরিবেশে বহু প্রাণীর “ঋতুভিত্তিক নিরাপত্তা-জাল” হিসেবে কাজ করে—বিশেষত খাদ্য টানাপোড়েনের সময়।
-
সমুদ্র-বরফের ভূমিকা: বরফই হলো “প্ল্যাটফর্ম”—এখানেই শিয়াল, গাল/আইভরি গাল, রেভেন প্রভৃতি সহজে অবশিষ্টাংশে পৌঁছাতে পারে। বরফ কমলে এই অ্যাক্সেস কমে যায়।
-
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট: ১৯৭৯-এর পর থেকে প্রতিটি দশকে আর্কটিক সমুদ্র-বরফ কমেছে; বরফ পাতলা ও স্বল্পমেয়াদি হচ্ছে—আঞ্চলিক ভিন্নতা থাকলেও মানব-ভল্লুক দ্বন্দ্ব ও স্থলভাগে কাটানো সময় বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বরফ-মৌসুম ছোট হলে ভল্লুকের সীল শিকারের সুযোগ ও সংখ্যায় ধাক্কা লাগে, ফলে ক্যারিয়ন-সাবসিডিও কমে স্ক্যাভেঞ্জার সম্প্রদায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ইতোমধ্যে গবেষণাটি যে খাদ্য-ক্ষতির পরিমাপ দিয়েছে, তা এই ডোমিনো-প্রভাব বোঝার একটি বাস্তব সূচক।
সমুদ্র-বরফ রক্ষা, গুরুত্বপূর্ণ আবাসস্থল চিহ্নিত-সংরক্ষণ, এবং মানব-ভল্লুক সহাবস্থান-কৌশল (যেমন: বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নিরুৎসাহন-প্রটোকল) সমন্বিত সংরক্ষণনীতি হিসেবে জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা তাই আরও স্পষ্ট।
