26 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৪:০৯ | ৫ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
গভীর সমুদ্র খনন
আন্তর্জাতিক পরিবেশ পরিবেশ বিজ্ঞান পরিবেশ রক্ষা

সমুদ্রের অতলে ‘ডিপ-সি মাইনিং’ বিতর্ক

গভীর সমুদ্র খনন নিয়ে নতুন বিতর্ক: অপরিহার্য ধাতু বনাম বিলুপ্তির ঝুঁকি

ইলেকট্রনিক্স এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রযুক্তির জন্য অপরিহার্য কোবাল্ট (Cobalt), নিকেল (Nickel) এবং ম্যাঙ্গানিজ (Manganese)-এর মতো মূল্যবান খনিজ সম্পদ আহরণের লক্ষ্যে গভীর সমুদ্রে খনন (Deep-Sea Mining) কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র বৈজ্ঞানিক ও পরিবেশগত বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এই খনিজগুলো বৈশ্বিক জ্বালানি রূপান্তরের জন্য অত্যাবশ্যক, বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে এই কার্যক্রম সমুদ্রের অতল গভীরে থাকা অজানা ইকোসিস্টেমের জন্য অপরিবর্তনীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

উদ্ভাবন এবং অর্থনীতির চালিকাশক্তি

  • টেকসই প্রযুক্তির চাহিদা: ব্যাটারি এবং অন্যান্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তির চাহিদা আকাশচুম্বী হওয়ায়, স্থলভাগের খনিগুলো এই বিপুল চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলস্বরূপ, বিশ্বের অনেক শিল্পোন্নত দেশ এবং প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সমুদ্রের তলদেশে, বিশেষ করে ক্লারিওন-ক্লিপারটন জোন (CCZ)-এর মতো স্থানে, মনোনিবেশ করছে।
  • খনিজ সমৃদ্ধ অঞ্চল: গভীর সমুদ্রের তলদেশে থাকা পলিমেটালিক নডিউলস (Polymetallic Nodules)-এ এই দুর্লভ ধাতুগুলি প্রচুর পরিমাণে জমাট বেঁধে থাকে। এগুলো আহরণকে অনেকে ‘টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয়’ বলে মনে করছেন।

গভীর পরিবেশগত বিপদ ঘণ্টা

যদিও গভীর সমুদ্রে খনন অর্থনৈতিকভাবে লোভনীয়, বিজ্ঞানীরা এর মারাত্মক পরিবেশগত পরিণতির বিষয়ে উচ্চ সতর্কবার্তা জারি করেছেন:



  • জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি: সমুদ্রের এই গভীর অঞ্চলগুলি পৃথিবীর সবচেয়ে স্বল্প-আলোকিত এবং কম পরিচিত ইকোসিস্টেমগুলির আবাসস্থল। শত শত নতুন প্রজাতি, যা এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে নথিভুক্ত হয়নি, তারা এই খনিজ নডিউলগুলির উপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করে। খনন প্রক্রিয়াটি সরাসরি তাদের আবাসস্থল ধ্বংস করে ফেলবে।
  • উপজাতের মেঘ (Plume Hazard): খনন কার্যক্রমের ফলে সৃষ্ট পলি ও বর্জ্যের মেঘ পানির স্তম্ভে মিশে গিয়ে বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই মেঘ মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীর শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত প্রভাব ফেলতে পারে।
  • অপরিবর্তনীয় ক্ষতি: যেহেতু এই গভীর সমুদ্রের ইকোসিস্টেমগুলি অত্যন্ত ধীর গতিতে বিকশিত হয়, বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে খননের ফলে সৃষ্ট ক্ষতি সহজে বা দ্রুত পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়

আন্তর্জাতিক নীতি এবং নিয়ন্ত্রণের অভাব

বর্তমানে, গভীর সমুদ্রে খনন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল সি-বেড অথরিটি (ISA), এখনও একটি পূর্ণাঙ্গ ও সর্বজনীনভাবে গ্রহণযোগ্য নিয়মাবলী তৈরি করতে পারেনি। এর ফলে অনেক দেশ এবং পরিবেশবাদী গোষ্ঠী খনন কার্যক্রম শুরু করার আগে নীতিগত স্থগিতাদেশ (Moratorium) ঘোষণার জন্য চাপ দিচ্ছে।

ভবিষ্যতের পথ:

পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ধাতুগুলির সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং একই সঙ্গে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা—এই দুটি লক্ষ্যের মধ্যে একটি কঠিন ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে, ধাতু পুনর্ব্যবহার (Recycling) এবং ব্যাটারি প্রযুক্তিতে নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রের উপর নির্ভরতা কমানোর পথগুলিই পরিবেশবান্ধব সমাধান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত