২০২৫ সালের মধ্যে বায়ুদূষণ কমানোর চেষ্টা করবে চীন
চলতি বছরের মধ্যে বায়ুদূষণ সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে চীন সরকার। এ জন্য বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন হ্রাসে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।
চীনের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বায়ু পরিবেশ বিভাগের পরিচালক লি তিয়ানওয়ে বলেছেন, বায়ুমানের পূর্বাভাস এবং সতর্কতা ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি ক্ষতিকারক বায়ু চলাচলকারী কণা (পিএম ২ দশমিক ৫) এবং ওজোন গ্যাসের দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা জোরদার করার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ বায়ুদূষণ কমানোর চেষ্টা করবে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে লির এই বিবৃতি রয়েছে। শনিবার এক বিবৃতিতে লি বলেন, ‘নীল আকাশের জন্য যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, চীনে বায়ুদূষণ একটি বড় সমস্যা, যা মানুষের জীবনযাত্রা এবং অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, বায়ুদূষণ প্রতিবছর প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষের মৃত্যুর কারণ, তাদের মধ্যে এক মিলিয়ন মৃত্যু ঘটে বাইরের বায়ুদূষণের কারণে এবং বাকি এক মিলিয়ন মৃত্যু ঘটে ঘরের পরিবেশে দূষিত জ্বালানি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে।
প্রতি ঘনমিটারে ৫০ মাইক্রোগ্রামের বেশি পিএম ২ দশমিক ৫ ঘনত্বকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু হিসেবে চিহ্নিত করে ডব্লিউএইচও। উল্লেখ্য, শ্বাসনালিতে প্রবেশযোগ্য বাতাসের সূক্ষ্ম কণিকাগুলোকে পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) বলা হয়।
এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র কণিকাগুলো ‘পিএম ২ দশমিক ৫’ নামে পরিচিত। কারণ, এগুলোর আকার ২ দশমিক ৫ মাইক্রনের কম। এগুলো মানুষের ফুসফুসে গভীরভাবে প্রবেশ করতে পারে এবং মূলত জ্বালানি পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন হয়।
২০২৪ সালে চীনের বায়ু গুণগত মান উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো হয়েছে বলে জানান লি তিয়ানওয়ে। গত বছর শহরগুলোতে পিএম ২ দশমিক ৫ এর গড় ঘনত্ব ছিল ২৯ দশমিক ৩ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।
এ ছাড়া ভালো বায়ু গুণমান নিয়ে দিনগুলোর হার ৮৭ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
লি আরো বলেন, চীনকে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে নতুন নির্গমন মান তৈরি করতে হবে এবং দেশের আকাশবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও লজিস্টিক পার্কে নবায়নযোগ্য শক্তিচালিত যানবাহন এবং যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়াতে হবে।
এ ছাড়া দূরপাল্লার মালপত্র পরিবহনব্যবস্থায় সড়কপথের পরিবর্তে রেল ও জলপথে পরিবহন করার উদ্যোগও নেবে চীন।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, দেশটি পরিবেশ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেয় এবং সবুজ জীবনধারা প্রচারের মাধ্যমে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ার জন্য প্রকৃতির সংরক্ষণ অপরিহার্য।