জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় নারীর অবদান অসীম
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে বীজ সংরক্ষণ, অভিযোজন এবং জলবায়ু সহনশীল কৌশল গ্রহণে নারীর অনেক ভূমিকা রয়েছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় নারীর অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে এক ওয়েবিনারে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের (এমজেএফ) উদ্যোগে ‘জলবায়ু মোকাবিলায় গ্রামীণ নারী: চর, উপকূল ও পার্বত্য এলাকা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এ সময় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, দেশে যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে পুরুষের চেয়ে নারী ১৪ ভাগ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কাটাতে এবং পরিবেশ ও অর্থনীতিতে নারীর অবদান অনেক।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটিয়ে কীভাবে নারীর অবদানকে আরও উঁচু মাত্রায় তুলে ধরা যায়, সে লক্ষ্যে সরকার একটি জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানান সাবের হোসেন চৌধুরী। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নারীর অবদানকে নীরব, কিন্তু শক্তিশালী বিপ্লব বলে চিহ্নিত করেন তিনি।
এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক ও সভাপ্রধান শাহীন আনাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নারীর জ্ঞান, দক্ষতা এবং সৃষ্টিশীল ধারণা খুবই শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। গ্রামীণ নারীর এ অবদান স্বীকৃত হতে হবে। তাহলে নারীর মর্যাদা বাড়বে এবং সমাজে বৈষম্য কমে আসবে।
গ্রামীণ অর্থনীতি গঠনে নারীর অবদান অনেক কিন্তু তাদের সেই অবদানের স্বীকৃতির অভাব আছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে।
তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থান ও গৃহস্থালি কাজের জন্য গ্রামীণ নারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার। তারা আরও বেশি প্রান্তিক হয়ে যায়। এ পরিবর্তনের সঙ্গে টিকে থাকতে নারীর অনেক অবদান রয়েছে।
এনজিওবিষয়ক ব্যুরোর পরিচালক (প্রকল্প-২) তপন কুমার বিশ্বাস বলেন, সমাজে নারী নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হয় এবং তাদের অনেক কাজের স্বীকৃতি মেলে না। নারীর ক্ষমতায়নে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নানা কাজ হচ্ছে।
ওয়েবিনারে তৃণমূলের নারীরা স্বাভাবিক সময়ে ও দুর্যোগকালীন নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতিতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, জলবায়ু সহনশীলতা সৃষ্টি, অপুষ্টি, খাদ্যসংকট ও দারিদ্র্য ঠেকাতে নারীর ভূমিকা মূল হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে নারীবৈষম্যের শিকার বলে আলোচনায় উঠে আসে।
ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর জুডিথ হারবাটসন, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব কো–অপারেশন কোরিন হেনচজ পিগনানি, ইউএন উম্যানের ডিআরআর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাকশনস প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট দিলরুবা হায়দার, পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফজলে রাব্বি সিদ্দিক আহমেদসহ প্রমুখ।