ব্লক ইটের ব্যবহারে সময় বাড়ছে আরো ২ বছর
ব্লক ইট কিছু তৈরি হলেও লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন না হওয়ার মধ্যে আগামী অর্থবছর থেকে সরকারি নির্মাণ ও মেরামত কাজে এর ব্যবহারে জোর দিয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রবিবার সংসদ ভবনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়।
এতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়াতে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তার সুপারিশ আসে। সেই সঙ্গে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ২০২৫ সালের পরিবর্তে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে।
কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সদস্য পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার ও খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন অংশ নেন।
জানতে চাইলে উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, বৈঠকে আগামী অর্থবছর থেকে সরকারি নির্মাণ ও মেরামত কাজে ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং ব্লক ইট ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে যৌথভাবে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।
লক্ষ্য অনুযায়ী অনুযায়ী বাস্তবায়ন হচ্ছে না দাবি করে উপমন্ত্রী বলেন, ‘সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজটি এগোতে হবে, প্রচেষ্টা থাকতে হবে। টার্গেটও ২০২৭ সাল করা হচ্ছে।
ব্লক ইট কিছু তৈরি হলেও সেটা ইমপ্লিমেন্টেশন করা যাচ্ছে না। সরকারি কাজে ব্লক ইটের ব্যবহার বাড়াতে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করতেই আরো জোর দিতে হবে। সড়ক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গণপূর্তসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে এক্ষেত্রে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য বলা হয়েছে।’
বছরভিত্তিক ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রায় বলা হয়েছিল, ২০১৯-২০ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণ কাজের ১০%; ২০২০-২১ সালের মধ্যে ২০%; ২০২১-২২ সালের মধ্যে ৩০%; ২০২২-২৩ সালের মধ্যে ৬০%; ২০২৩-২৪ মধ্যে ৮০% এবং ২০২৪-২৫ সালে ১০০% ব্লক ইট ব্যবহার করতে হবে।
বৈঠকের কথা তুলে ধরে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসেছিলাম। আগামী বছর তাদের কী পরিমাণ ইটের চাহিদা তা দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাতে বলেছি।
তাদের চাহিদার তথ্য নিয়ে আমরা উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বসব। দুটোর সমন্বয় করে আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে চাই। আমাদের টার্গেট আগামী বছর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ব্লক ইট ব্যবহার নিশ্চিত করা।’
এ বিষয়ে উৎপাদনকারীদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে জানানো হয়, দেশে বর্তমানে আট হাজারের বেশি ইট ভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় বছরে তিন হাজার ৫০০ কোটি ইট পোড়ানো হয়। এসব ইট পোড়াতে ৫৬ লাখ মেট্রিক টন কয়লা ব্যবহার করা হয়। এতে বায়ু দূষণ, কার্বন নিঃসরণের পাশাপশি ১২ কোটি ২৫ লাখ মেট্রিক টন টপ সয়েল নষ্ট হচ্ছে।
কমিটি সভাপতি জানান, সরকারি নির্মাণ কাজে ব্লক ইট ব্যবহারে আগেই প্রজ্ঞাপন ছিল। কিন্তু তার বাস্তবায়ন নেই। বছরে উৎপাদিত তিন হাজার ৫০০ কোটি ইটের ৯২ শতাংশ সনাতন পদ্ধতিতে হচ্ছে। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে পোড়ানো হয় সাত শতাংশ। বাকি এক শতাংশ না পোড়ানো ইট (ব্লক ইট) ব্যবহার হচ্ছে।
সাবের হোসেন বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারি নির্মাণ কাজে শতভাগ ব্লক ইট ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা রিভাইস করে ২০২৭ সাল করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।