28.6 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৩:৪৬ | ১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
দূষিত পরিবেশে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি
বাংলাদেশ পরিবেশ

দূষিত পরিবেশে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

দূষিত পরিবেশে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

প্রতিটি জীবেরই বেঁচে থাকার জন্য প্রতিনিয়ত পরিবেশ থেকে রসদ সংগ্রহ করতে হয়। আমরা পরিবেশ থেকে খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করছি। আমাদের স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার জন্য আমরা পরিবেশের ওপর প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল।

আবার, পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের দূষণের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে আছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। পরিবেশদূষণজনিত অসুখ-বিসুখ আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, গড় আয়ু ও মৃত্যুর হারের ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকার দূষণ শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও স্নায়বিক ক্ষতি সাধন করে।

যানবাহন ও কলকারখানার ধোঁয়া বায়ুদূষণের প্রধান কারণ। শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে ঢাকা শহরে বায়ুদূষণের ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি।



যানবাহন, শিল্পকারখানা ও ইটের ভাটায় কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে নির্গত ধোঁয়া বিভিন্ন ধরনের পার্টিকুলেট ম্যাটার, ধূলিকণা, সিসা, কার্বন, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং কার্বন ডাই-অক্সাইডের উৎস, যা প্রতিনিয়তই দূষিত করছে বায়ু।

রাস্তার পাশে খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থেকে শুরু করে অফিস-আদালত এবং ঘরে ব্যবহৃত এসি, মশার কয়েলের বিষাক্ত ধোঁয়া–সবই বায়ুদূষণের উৎস।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

বায়ুদূষণের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে নাক-মুখ জ্বালাপোড়া করা, মাথা ঝিমঝিম করা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, অ্যালার্জি অন্যতম।

রোগ

দীর্ঘ মেয়াদে বায়ুদূষণ ফুসফুসের ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, ব্রংকাইটিস রোগের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া বায়ুদূষণ বিভিন্ন চর্মরোগও তৈরি করতে পারে।

শব্দদূষণ

যেসব উচ্চমাত্রার শব্দের কারণে আমাদের কানের স্বাভাবিক শ্রবণক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা-ই শব্দদূষণ। যেমন যানবাহনের উচ্চ মাত্রার হর্ন, মেশিনের যান্ত্রিক শব্দ, মাইকের উচ্চ শব্দ, ভবন নির্মাণের শব্দ, জেনারেটরের শব্দ, কারখানা থেকে নির্গত উচ্চ শব্দ দূষণের জন্য দায়ী। উচ্চ শব্দ হাসপাতাল ও বাড়িতে থাকা বয়স্ক মানুষ ও রোগীদের জন্য গুরুতর একটি সমস্যা।



রোগ

শব্দদূষণের কারণে মানসিক ও শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর কারণে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ ও স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘদিন উচ্চ আওয়াজ শুনলে ধীরে ধীরে শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া এবং একপর্যায়ে বধির হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

মাটিদূষণ

বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর জিনিস মাটিতে মিশে মাটি দূষিত হয়। রাসায়নিক সার, কীটনাশক, বিভিন্ন বর্জ্য পদার্থ মাটিকে দূষিত করছে। ফলে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে, দূষিত মাটিতে উৎপন্ন খাদ্যদ্রব্য খেয়ে মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগ হচ্ছে। এ কারণেই মাটিদূষণ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

শাকসবজিতে লেগে থাকা দূষিত মাটি বমি বমি ভাব, ক্লান্তি ও মাথা ধরার কারণ হতে পারে। এ ছাড়া দূষিত মাটি ত্বকে লাগলে ফুসকুড়ি, চুলকানি, ঘাসহ বিভিন্ন চর্মরোগ হতে পারে।

রোগ

বালাইনাশক ও রাসায়নিক সারের মধ্যে থাকা বেনজিন, ক্রমিয়াম এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের জন্য ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পারদ ও সাইক্লোডাইনসের জন্য হতে পারে কিডনি ও লিভারের রোগ।

পানিদূষণ

কলকারখানার বর্জ্য, মানুষের বর্জ্য, ময়লা-আবর্জনা, মৃত জীবজন্তু, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক পানিতে মিশে পানি দূষিত হয়।



রোগ

পয়োনিষ্কাশনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকলে মল দিয়ে খাওয়ার পানি দূষিত হলে ডায়রিয়া, কলেরা প্রভৃতি রোগ হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ ছাড়া দূষিত পানি টাইফয়েড, হেপাটাইটিসজনিত জন্ডিস ও নানা চর্মরোগের জন্য দায়ী। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় হতে পারে আর্সেনিকের প্রভাবে বিভিন্ন রোগ।

খাদ্যদূষণ

ফলমূল, শাকসবজি, মাছসহ বিভিন্ন খাবারে কীটনাশক, প্রিজারভেটিভ হিসেবে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ, যেমন ফরমালিন, কারবাইড, কৃত্রিম রং ইত্যাদি মেশালে খাদ্য দূষিত হয়।

এ ছাড়া খাবারে অনিরাপদ পানির ব্যবহারও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। খাদ্যদূষণের কারণে অন্ত্রের নানা রোগসহ, লিভার, কিডনির কার্যক্ষমতাও হ্রাস পায়। গ্যাস্ট্রিক আলসারসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। কখনো কখনো এসব কারণে ক্যানসারও হতে পারে।

সংক্রামক রোগ

দূষিত পরিবেশ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াসহ সব রকম জীবাণুর উৎস। দূষিত খাবার, পানি ও বাতাসের মাধ্যমে যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। দূষিত পরিবেশের কারণে টাইফয়েড, কলেরা, যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, বসন্ত হতে পারে। অন্যদিকে, পরিবেশগত কারণে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে সংক্রামক রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

তাপমাত্রার প্রভাব

পরিবেশদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুর ওপর। ফলে অতিউচ্চ বা নিম্ন তাপমাত্রার সৃষ্টি হয়। আমাদের দেশে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য হিট ক্র্যাম্প থেকে হিট স্ট্রোক খুব সাধারণ একটি ঘটনায় পরিণত হয়েছে। হিট স্ট্রোক মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।

পরিবেশকে প্রেক্ষাপট থেকে বাদ দিয়ে জীবন ধারণের কথা কল্পনা করা অসম্ভব। ফলে নিজেদের সুস্থ, স্বাভাবিক, নিরাপদ জীবনের স্বার্থে পরিবেশের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, দূষিত পরিবেশ রোগের আঁতুড়ঘর।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত