35 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
বিকাল ৪:৩৬ | ১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
প্লাস্টিক পরিবেশের পাশাপাশি মানবদেহেও মিশে যাচ্ছে
পরিবেশ দূষণ

প্লাস্টিক পরিবেশের পাশাপাশি মানবদেহেও মিশে যাচ্ছে

প্লাস্টিক পরিবেশের পাশাপাশি মানবদেহেও মিশে যাচ্ছে

কিছুদিন আগে পালিত হলো বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে দেশে সরকারি-বেসরকারিভাবে নেওয়া হয় নানা কর্মসূচি। কিন্তু বলা যায়, সেগুলোর সবই ছিল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র! কথাটা বলা হলো এ কারণে যে, প্লাস্টিক দূষণ রোধে আসলেই কি আমরা আন্তরিক?

বাজারে গেলেই চোখে পড়ে বিক্রেতারা বিভিন্ন পণ্য পলিথিনের ব্যাগে তুলে দিচ্ছেন। ক্রেতারাও নির্দ্বিধায় তা নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে ইচ্ছায় হোক কিংবা অজান্তে, প্রত্যেকেই প্লাস্টিক দূষণের দায়ে দোষী। তবে প্লাস্টিকের ভয়াবহতা বুঝতে পেরে বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও আইন করে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।



আইন অমান্যকারীর জন্য ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকার জরিমানার বিধানও রাখা হয়। বাজারজাত করা হলে রাখা হয় ৬ মাসের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান।

কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রশাসন এখনো পলিথিনের বিরুদ্ধে সেভাবে কোনো অভিযান চালাচ্ছে না। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। ফলে ক্ষতিকর প্লাস্টিক আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এখন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে। সারা দেশে এমন পরিবার একটিও মিলবে কি না সন্দেহ, যার ঘরে প্লাস্টিকের পণ্য বা পলিথিন নেই।

সত্তরের দশকে আমাদের দেশে যেসব পণ্য কাঁচের বোতলে বিক্রি হতো, সেসবের অধিকাংশই এখন প্লাস্টিকের বোতলে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচের বোতল ভঙ্গুর এবং তুলনামূলকভাবে প্লাস্টিকের চেয়ে দামি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এদিকে ঝুঁকছেন। একটা সময় ছিল যখন শহর তো বটেই, গ্রাম-বাংলার ঘরে ঘরে চীনামাটি বা টিনের থালার কদর ছিল।

ছিল কাঁসা, পিতল, অ্যালুমিনিয়ামের ঘটি-বাটি। ছিল ধাতব গামলা, বালতি, লোটা, মগ, বদনার ব্যবহার। কিন্তু গত তিন-চার দশকের মধ্যে এসবের জায়গা দখল করেছে প্লাস্টিকের সামগ্রী। প্লাস্টিকের পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সরকারের নিয়ন্ত্রণের অভাবে একচেটিয়াভাবে বাড়ছে এর ব্যবহার।



প্লাস্টিক পরিবেশের পাশাপাশি মানবদেহেও এমনভাবে মিশে যাচ্ছে যে, তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করছে। নবজাতক শিশুর সবচেয়ে নিরাপদ যে খাবার, সেই মায়ের বুকের দুধেও সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা মাইক্রোপ্লাস্টিক বা অতি ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন।

এর আগে একই বিজ্ঞানী দল মায়ের গর্ভের ফুলে মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি শনাক্ত করে। এরও আগে ডাচ ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর হেলথ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এক গবেষণায় মানুষের রক্তেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের উপস্থিতি মেলে।

মনে রাখতে হবে, প্লাস্টিক ও পলিথিন পচে না। মাটির নিচে এটি ৪০০ থেকে ৫০০ বছর অক্ষয় থাকে। এর ফলে মাটির স্বাভাবিক উর্বরতা নষ্ট হয়। আবার প্লাস্টিক পুড়িয়ে ধ্বংস করতে গেলে পরিবেশ দূষণ ঘটার মতো উপাদান বায়ুতে মেশে। প্লাস্টিক যে কেবল ভূ-ভাগেই বিড়ম্বনা বাড়াচ্ছে তা নয়, সাগর-মহাসাগরে প্রতিনিয়ত জমছে প্লাস্টিক-বর্জ্য।

খাদ্য ভেবে ভুল করে তা খাচ্ছে হাঙর, তিমি, ব্যারাকুডার মতো প্রাণী। প্লাস্টিকের দূষণ রোধে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি তাই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সরকারকে প্লাস্টিকের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

প্লাস্টিকপণ্য যেখানে-সেখানে না ফেলার বিষয়েও কঠোর হতে হবে। প্লাস্টিক বা পলিথিনের উপযুক্ত বিকল্প উদ্ভাবন করতে হবে। সরকার প্লাস্টিকের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা বেগবান করতে হবে। একই সঙ্গে সবাইকে প্লাস্টিকসামগ্রীর ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত