32 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ১:৫৬ | ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
বর্ষা নেই, শুকিয়ে যাবে বিস্ময়কর হ্রদ প‌্যাংগং
জলবায়ু

বর্ষা নেই, শুকিয়ে যাবে বিস্ময়কর হ্রদ প‌্যাংগং

বর্ষা নেই, শুকিয়ে যাবে বিস্ময়কর হ্রদ প‌্যাংগং

স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কিছুদিন আগে এখানে জল বইত। বালিতে স্রোতের দাগ। এখান থেকে আর দু’-তিন কিলোমিটার দূরে প্যাংগং লেক। ১২৫ কিলোমিটার জুড়ে টল টল করছে সুনীল জলরাশি। প্যাংগং লেকের জলও কিন্তু আগের চেয়ে কমে গিয়েছে।

গোটা লাদাখ উষ্ণায়নের জেরে ভয়ংকর সংকটে। একদিকে যখন সমুদ্রে জলস্তর বেড়ে স্থলভূমি বিশ্বজুড়ে সংকটে, তখন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শুধু হিমালয় নয়, এই শীতল উচ্চ মরুদেশের পাহাড়চূড়ায় যত হিমবাহ আছে সবই তীব্র গতিতে গলছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে লাদাখ, বিশেষ করে লে জেলা বাস করার অযোগ্য হয়ে উঠবে। ক্রমশ শুকিয়ে যাবে প্যাংগং লেক।

একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় সিনেমায় শুটিং স্পট ছিল কাশ্মীরের ডাল লেক। কিন্তু, পটভূমি বদলেছে। দুর্গমতাকে পিছনে ফেলে মুখ তুলেছে লাদাখ। প্রথমে আমির খানের ‘থ্রি ইডিয়েটস’ ও পরে শাহরুখ খানের ‘যব তক হ‌্যায় জান’-এই দুই সুপার-ডুপার হিট চলচ্চিত্রের জন‌্য প‌্যাংগং সংবাদ শিরোনামে।



বলা যায়, দেশের উত্তরপ্রান্তে লুকিয়ে থাকা এই অনিন্দ‌্যসুন্দর লেক দেখার জন‌্য এখন যেন ঢল নেমেছে লাদাখে। ফলে প‌্যাংগংয়ের চারপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ‌্য টুরিস্টদের থাকার তাঁবু। যা এলাকায় ইকো ব‌্যালান্স নষ্ট করছে।

সাধারণ পাহাড়ি এলাকা আর লাদাখের মধ্যে অনেক ফারাক। তিব্বতি মালভূমির অংশ লাদাখ কার্যত মরুভূমি। ন্যূনতম উচ্চতা দশ হাজার ফুট। লে শহরের উচ্চতা সাড়ে এগারো হাজার ফুট। হিমালয় পেরিয়ে এখানে বর্ষা প্রবেশ করে না। ফলে বৃষ্টি না হওয়ায় এই অঞ্চল শুষ্ক।

লাদাখের এমন অঞ্চল আছে যেখানে মাইলের পর মাইল ঘুরলেও মিলবে না একটি গাছ অথবা কোনও প্রাণী। আকাশে ওড়ে না পাখি। স্বভাবতই নেই গ্রাম। জয়সলমেঢ়ের মতো ধু ধু করছে।

মাটির ঢিপির সদৃশ পাহাড়ের মাথাগুলো শ্বেতশুভ্র হয়ে আছে বরফে। কিন্তু কোনও ঝরনা নেই। নদীখাতে তির তির করে বইছে সামান্য জল। এই যেখানে অবস্থা, জলাশয়গুলি বাঁচবে কী করে।

লে থেকে প্যাংগং যেতে পেরতে হয় চাংলা পাস। সাড়ে সতেরো হাজার ছ’শ আশি ফুট। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পাস। সারা বছরই বরফে মোড়া। পাস পেরলে মোটামুটি উপত্যকা ধরে প্রায় একশো কিলোমিটার পর প্যাংগং।

এই পথের উচ্চতা বারো থেকে পনেরো হাজার ফুট। লক্ষ্য করলাম গোটা পথ রুক্ষ। অনেক এলাকা দেখে বোঝা যাচ্ছে আগে জল ছিল। ক্রমে শুকিয়ে গিয়েছে। বর্ষা নেই, তুষারপাত কমছে।

ফলে জলের সোর্স হারিয়ে যাচ্ছে। শুনলাম জলসংকট সোমোরিরিতেও। এই দুই বিশাল প্রাকৃতিক লেকের জল পানীয় হিসাবে ব্যবহার করার উপায় নেই। কারণ স্বাদ নোনতা।



লে আর কারগিল এই দুই জেলা নিয়ে লাদাখ। তুলনায় কারগিলে সবুজ একটু বেশি। জলের সোর্সও। কিন্তু সিন্ধু নদীর জলের উপর অনেকটাই নির্ভর লে। একটাই বাঁচোয়া, লাদাখে জনসংখ্যা খুবই কম। ২০২১ সালের জনগণনায় লাদাখে ২ লক্ষ ৯৭ হাজার মানুষ বাস করেন। এর মধ্যে লে জেলায় ১ লক্ষ ৩৮ হাজার।

এই তথ্য থেকে বোঝা যায় আয়তনে পাঞ্জাবের চেয়ে বড় হলেও কেন বাসের অযোগ্য লাদাখ? এখানে জনসংখ্যা মাত্র তিন লক্ষ, তখন সুজলা সুফলা পঞ্জাবে বাস করেন তিন কোটির বেশি মানুষ। জল হল জীবন, বেঁচে থাকতে গেলে মানুষের জল চাই-ই। সেটাই যদি না থাকে মানুষ বাস করবে কেন? জল নেই তাই কৃষিও নেই।

যৎসামান্য কিছু চাষ। তবু জনসংখ্যা কম বলেই এখনও সমস্যা বড় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ব উষ্ণায়ন বিপদ ডেকে আনবে লাদাখে। এমন একদিন আসবে, হিমবাহর জলে আর সমস্যা মিটবে না। আরও শুকিয়ে যাবে বিস্ময়কর হ্রদ প‌্যাংগং।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত