এল নিনোর প্রভাবেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে
বিশ্বজুড়ে এল নিনোর আগমন ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। এল নিনোর প্রভাবেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জীবন ও জীবিকা বাঁচাতে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এল নিনো ফিরছে। এটি মূলত খরা পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, প্রশান্ত মহাসাগরের পানির উষ্ণতা একটা সময় বেড়ে যায়।
এল নিনোর সময় প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে উষ্ণ পানির মাত্রা বেড়ে যায়। তবে স্প্যানিশ শব্দ যুগলের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘ছোট্ট শিশু’।
এ বছর বা সামনের বছর এল নিনোর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেকটা বেড়ে যেতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
এর আগে মে মাসে ডব্লিউএমও এক পূর্বাভাসে জানায়, এখন থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে অন্তত ৩৬৫ দিন বা পুরো এক বছর সময়ের তাপমাত্রা শিল্পায়ন-পূর্ব যুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বৈশ্বিক তাপমাত্রার বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্য থেকে বিশ্ব ক্রমে দূরে যাচ্ছে বলে মনে করেন জলবায়ুবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, কয়েক মাস ধরে স্থলভাগ ও সাগরের তাপমাত্রায় রেকর্ড হয়েছে। অথচ দেশগুলো এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
আগামী নভেম্বরে দুবাইয়ে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন (কপ-২৮) অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে গত জুন মাসের শুরুর দিকে জার্মানির বন শহরে একত্র হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (সিথ্রিএস) জানায়, সেখানে আলোচনা হয়, কিছুদিন ধরে ভূপৃষ্ঠে বায়ুর তাপমাত্রা শিল্প যুগের আগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি রয়েছে।
যদিও এর আগে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমা অতিক্রম করেছিল, তবে উত্তর গোলার্ধে এমনটা হয়নি। উত্তর গোলার্ধে গত ১ জুন থেকে গ্রীষ্মকাল শুরু হয়েছে। এর আগে এপ্রিল ও মে মাসে সাগরের তাপমাত্রা আগের রেকর্ড ভেঙেছিল।
বিশ্বের শীর্ষ দুই গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী দেশ হলো চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। চীনের রাজধানী বেইজিং গত জুন মাসে তাপমাত্রা আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। অন্যদিকে, তীব্র তাপদাহ আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্রে।