শতবর্ষী গোদার পুকুর খুঁজতে সাতকানিয়ায় পরিবেশ অধিদপ্তর
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পৌর সদরে ভরিয়ে ফেলা শতবর্ষী গোদার পুকুর পরিদর্শন করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি টিম। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে।
প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রভাবশালীদের ‘মধ্যস্থতায়’ পুকুরটি ভরাট করেছে একটি সিন্ডিকেট। ট্রাক-এক্সকেভেটর লাগিয়ে দিনব্যাপী ভরাটযজ্ঞ চললেও সেই সময় পাকাপোক্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় ও পরিবেশ অধিদপ্তর।
এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের টিম সাতকানিয়া পৌঁছার খবরে অর্ধশত কিশোর-যুবক নিয়ে বিশেষ ‘প্রহরা’ বসিয়েছে পুকুরখেকোরা। বিশেষ প্রহরা বসালেও ঘটনাস্থলে পুকুর ভরাটের সঙ্গে জড়িত কিংবা পুকুরে মূল উত্তরাধিকারী কেউ উপস্থিত ছিলেন না। পরিবেশ অধিদপ্তরকে স্থানীয় ‘প্রভাব’ দেখাতে নাকি স্থানীয়দের ‘ভয়’ দেখাতে বিশেষ এই প্রহরা!
বিশেষ প্রহরা বসিয়ে ৫০ বছরের অধিক সময় আগে পুকুরটি ভরাট করা হয়েছে মর্মে ‘ভাড়াটে’ সাক্ষ্য দেওয়ানো হয় বলে জানা গেছে বিশেষ প্রহরার নেতৃত্বে থাকা একাধিক যুবকের কাছ থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, মহসীন ভাই সব ম্যানেজ করেছেন। আমাদের শুধু শহর থেকে আসা স্যারদের সঙ্গে থাকতে বলেছেন।
সাতকানিয়া পৌরসদরের দেওয়ানহাট বাজার ও বাজার মসজিদের মুসল্লিদের ব্যবহৃত পুকুরটি ভরাট করতে বছর পাঁচেক আগে থেকেই কৌশলে কার্যক্রম শুরু করে চক্রটি। শুরুতে ময়লা আবর্জনা ফেলে, পরে বিভিন্ন জায়গা থেকে কচুরিপানা এনে ব্যবহারের অনুপযোগী করে তুলে পুকুরটি।
উত্তরাধিকারসূত্রে পুকুর মালিকদের একজন তার ব্যক্তিগত বিল্ডার্সের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের ‘টাকার খনি’ দেখিয়ে পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ যজ্ঞে ভেড়ান। এর আগে স্থানীয় বিত্তশালীদের বিভিন্ন সময়ে মার্কেট নির্মাণে ভিড়িয়ে নিলেও পুকুর ভরাটের কারণে তারা সরে যায়।
সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল পুকুরটি ভরাটের কার্যক্রম শুরু করে ওই বিল্ডার্সসহ অন্যান্য শরিকদাররা। শুরুতে উত্তরপাশে অর্ধশত ট্রাকে করে মাটি দিয়ে ভরাট করে তারা। এরপর দিনদুপুরে বিভিন্ন পাশ থেকে চলে ভরাটযজ্ঞ। এ সময়ে প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় গত ১৯ জুন পুকুরটি ভরাটযজ্ঞ সফল করে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি টিম তদন্তে গিয়েছিল। তারা ফিরে প্রতিবেদন জমা দেবে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।