নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে রংপুরে গড়ে উঠেছে অবৈধ স’মিল
রংপুরের কাউনিয়ায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ স’মিল। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের ছাড়পত্র এবং বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই গড়ে উঠেছে ৩৯টিরও বেশি মিল।
কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও নজরদারি না থাকায় উপজেলার যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এসব মিল। ফলে উজাড় হচ্ছে পরিবেশবান্ধব গাছ-পালা। সেই সঙ্গে পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়ছে।
স’মিল স্থাপনে বন বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নিতে হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। তবে সরকারি অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিনোদন পার্ক, উদ্যান, জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে স’মিল স্থাপন করার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়া যে কোনো সরকারি ট্রেজারি চালান জমা দিয়ে শর্ত মেনে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
কিন্তু উপজেলায় হারাগাছ পৌরসভাসহ ৬ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৩৯টি স’মিল গড়ে উঠেছে। ৩৯টির মধ্যে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৩টির।
বাকি ৩৬টি বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে। বাকি সব স’মিল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ সব মিল চলছে শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন অথবা বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে। মিল চালানোর নিয়ম-নীতি মানা তো দূরের কথা এসব মিলের মালিক ও কর্মচারীরা জানেই না মিল চালানোর নিয়ম-নীতি আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার একজন স’মিল মালিক জানান, মিল স্থাপনে লাইসেন্স নিতে হয় সে বিষয়ে আমার জানা নাই। তবে কিছুদিন আগে একজন সরকারি লোক আমার কাছে এসেছিলেন এবং তিনি লাইসেন্স করার কথা বলে গেছেন। কিন্তু কোথায় গিয়ে লাইসেন্স করতে হবে তা আমি স্পষ্ট জানি না।
তার মিলে কর্মরত ৩ জন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, কিভাবে দুর্ঘটনা এড়িয়ে মিলে কাজ করতে হয় সে বিষয়ে তাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। সেই সঙ্গে নেই তাদের নির্ধারিত পোশাকও। বিগত সময় মিলের কাটিং মাস্টারের সঙ্গে জোগালির কাজ করে করে তারাও এখন কাটিং মাস্টার হিসাবে কাজ করছে।
উপজেলা বন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা ফরেস্টার মো. নুর নবী জানান, পীরগঞ্জ ও কাউনিয়ায় তালিকাভুক্ত স’মিল ৩৯টি, এর মধ্যে বৈধ লাইসেন্স রয়েছে ৩টির, আর ২টির আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মিলের বৈধ লাইসেন্স করার জন্য বাকিদের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রংপুরে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিদুল হক জানান, এ বিষয়ে বন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।