28 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ৪:৪০ | ৬ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
মারাত্মক হুমকির মুখে পৃথিবীর ফুসফুস
পরিবেশ দূষণ

মারাত্মক হুমকির মুখে পৃথিবীর ফুসফুস

মারাত্মক হুমকির মুখে পৃথিবীর ফুসফুস

প্রতিদিন সকালে আপনি যে পাখির গান শুনছেন বা বাগানে গেলে যে প্রজাপতি দেখেন, তা আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখবে তো? আর ছয় থেকে সাত দশক পরে আপনি হয়তো পৃথিবীতে থাকবেন না, কিন্তু আপনার সঙ্গে সঙ্গে অনেক পরিচিত পাখি বা প্রাণীর বিলোপ ঘটবে এই শতাব্দীতে।

উষ্ণতা বৃদ্ধি, মরুভূমির বিস্তৃতিসহ জলবায়ুর বিভিন্ন সংকট, প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত ব্যবহার আর দূষণের মতো গুরুত্বপূর্ণ সংকট আমাদের পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতির পরিমাণ বাড়াচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, আমরা যে পৃথিবী এখন দেখছি, তা ২০৫০ সালের মধ্যে বদলে যাবে। খাদ্য সরবরাহ ও নিরাপদ পানির সংকটের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বিলোপ ঘটবে। ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার কারণে প্রকৃতির ওপরে বাড়তি চাপ তৈরি হবে।

সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু সংকটের কারণে দাবানল, বন্যা ও চরম আবহাওয়ার তীব্রতা বাড়ছে।



জীববিজ্ঞানী সান্দ্রা মিরনা দিয়াজ বলেন, ‘জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি সংকুচিত হচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে অনেক ধরনের বিলুপ্তির সংবাদ সামনে আসবে।

ফসল–খেকো প্রাণীর বিস্তারে প্রায়ই নতুন রোগ দেখা যাবে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে সামুদ্রিক মাছের পরিবেশ বিপর্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি অনেক বন হারিয়ে যাবে।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ আইইউসিএন লাল তালিকা অনুসারে সব উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজাতির এক–চতুর্থাংশের বেশি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের পরিচালক আলেকজান্দ্রে আন্তোনেলি বলেন, ‘আমার দেশ ব্রাজিলে প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংস দেখে আমার দুঃখ হয়। আমাজন ও আটলান্টিকের রেইনফরেস্ট থেকে শুরু করে সেররাডো অঞ্চলের ঝোপঝাড় কমে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে অগণিত পোকামাকড়, ছত্রাক, অণুজীবের আবাসস্থল ও অর্কিড।

মানুষের নিষ্ঠুরতার কারণে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির জীববৈচিত্র্য। আমাদের সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবিলার জন্য বিশ্বজুড়ে প্রকৃতি পুনরুদ্ধারে কাজ করতে হবে। মাংসের ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার যেকোনো উপায়ে কমাতে হবে।’

আর্জেন্টিনার জীববিজ্ঞানী সান্দ্রা মিরনা ডিয়াজ বলেন, ‘গত ৫০ বছরে জীববৈচিত্র্য হ্রাসের বড় একটা কারণ হচ্ছে ভূপৃষ্ঠের নানা ব্যবহার। এই ধারা আগামী দশকে চলতে থাকলে লবণাক্ততা ও দূষণের কারণে মাটির গুণগত মান আরও খারাপ হবে।



গত ১০ হাজার বছরে আমরা ফসল চাষের জন্য সারা বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বন ধ্বংস করে ফেলেছি। এর ফলে ক্রান্তীয় রেইনফরেস্টের মতো বড় বাস্তুতন্ত্র ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এই বাস্তুতন্ত্র সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য ধারণ করে।’

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমা আর্চার বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আফ্রিকার বিভিন্ন এলাকার প্রকৃতি পরিবর্তিত হচ্ছে। কৃষিব্যবস্থার পরিবর্তনসহ খনি খননের কারণে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

এ বিষয়ে আমাজনের আদিবাসী পাঙ্কারুর গোষ্ঠীর সদস্য ক্রিস্টিয়ান জুলিয়া সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা যদি জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিই, তাহলে আমাজনও মরুভূমিতে পরিণত হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় মরুভূমি হবে আমাজন—কেমন ভয়ানক হবে ভাবুন তো? বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে এসব হচ্ছে। বর্তমান ধারাকে এখনই পরিবর্তন করতে কাজ শুরু করতে হবে।’

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত