জলবায়ু ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ
অস্ট্রেলিয়ায় জলবায়ু ভিসায় গিয়ে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ (খবর বিবিসির)। অস্ট্রেলিয়া জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নাগরিকদের জন্য একটি ভিসা প্রোগ্রাম চালু করেছে, যা “জলবায়ু ভিসা” নামে পরিচিত।
অস্ট্রেলিয়ার এই নতুন ভিসা প্রোগ্রামটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ঝুঁকির সম্মুখীন দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ
বিশ্বে প্রথম দেশ হ’ল অস্ট্রেলিয়া যারা জলবায়ু ভিসা চালু করেছে। জলবায়ু ভিসাধারীরা ইচ্ছা করলে সেদেশে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রথম দফায় একমাত্র প্রশান্ত মহাসাগরের জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র দ্বীপ টুভালুর জনগন এ ভিসার সুযোগ পাবে। পরবর্তিতে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত প্রসান্ত মহাসাগরের অন্যান্য দেশও এ ভিসার সুযোগ পাবে।
এ ভিসার আবেদন গ্রহনের জন্য গত ১৬ জুন, ২০২৫ একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়। খবর বিবিসির। আবেদনের পদ্ধতি ও বিস্তারিত দেখুন কমেন্টে: Department of Foreign Affairs and Trade (DFAT) website.
এ ভিসার জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে এবং ব্যাপক সাড়াও মিলেছে। ইতোমধ্যে টুভালুর জনগনের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি নাগরিক অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু ভিসার জন্য আবেদন করেছে। ভিসা পাওয়া গেলে তাদের পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে অভিবাসনের সুযোগ করে দেওয়া হবে। ২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী টুভালুর সর্বমোট জনসংখ্যা ১০,৬৪৩ জন।
সবেমাত্র জলবায়ু ভিসার আবেদনের তারিখ অদ্য ১৮ জুলাই, ২০২৫ তে শেষ হয়েছে। বছরে র্যান্ডম পদ্ধতিতে ২৮০টি ভিসা টুভালুর নাগরিকদের জন্য ইস্যু করা হবে। ভিসাধারীরা অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের ন্যায় দেশ- বিদেশ অবাধে ভ্রমণ করতে পারবেন।
জলবায়ু ভিসার আওতায় অস্ট্রেলিয়ায় আগমনের সময় অস্ট্রেলিয়ান সহায়তাও প্রদান করা হবে। সহায়তার মধ্যে থাকবে সে দেশের মেডিকেয়ার সিস্টেমে অ্যাক্সেস, শিশু যত্ন ভর্তুকি এবং অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের মতো একই ভর্তুকিতে স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বৃত্তিমূলক সুবিধাগুলোতে পড়াশোনা করার সুযোগ।
ভিসার আবেদন খরচও কম। চলতি বছর জলবায়ু ভিসার আবেদনকারীদের ভিসাপ্রাপ্তির পর অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের খরচ মাত্র জনপ্রতি ২৫ অস্ট্রেলীয় ডলার নির্ধারণ করেছে অস্টেলিয়র সরকার।
গত আগস্ট’২০২৪ এ ঘোষিত অস্ট্রেলিয়া-টুভালু ফ্যালেপিলি ইউনিয়নের অংশ হিসেবে টুভালুর নাগরিকদের জন্য অস্ট্রেলিয় সরকার নতুন শ্রেণির এ জলবায়ু ভিসার সুযোগ প্রদান করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা এবং সামরিক আগ্রাসন প্রতিরোধে দ্বীপটিকে রক্ষা করার জন্য অস্টেলিয়া প্রতিশ্রুতির অন্তর্ভুক্ত করেছে।
গত বছর এক বিবৃতিতে টুভালুর প্রধানমন্ত্রী ঘোষমা বলেন যে, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে অস্ট্রেলিয়াই একমাত্র দেশ যারা জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পেক্ষাপটে ক্ষতিকারক প্রভাব মোকাবেলায় টুভালুর ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রত্ব এবং সার্বভৌমত্বকে আইনগত ভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
এই ভিসার মাধ্যমে টুভালুর মতো অন্য দেশের নাগরিকরাও অস্ট্রেলিয়ায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারবেন এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র বিভাগ জলবায়ু-সম্পর্কিত স্থানচ্যুতির হুমকির প্রতি একটি যুগান্তকারী প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভিসা প্রোগ্রামটিকে চিহ্নিত করেছে। বলেছে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র পাঁচ মিটার (১৬ ফুট) ওপরে ক্ষুদ্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ু-হুমকির দেশগুলোর মধ্যে একটি।