জলবায়ু বিপর্যয়ের মুখে দক্ষিণ এশিয়া: চরম বন্যা ও তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
দক্ষিণ এশিয়া, যা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকটে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলির মধ্যে অন্যতম, সেখানে চরম আবহাওয়ার ধাক্কা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞরা এখন দ্রুত আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছেন।
একটি নতুন বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলের প্রায় ৯০% মানুষ চরম তাপপ্রবাহের শিকার হবে এবং প্রতি চারজনের মধ্যে একজন মারাত্মক বন্যার সম্মুখীন হবে। এই ধরনের সম্মিলিত বিপদ মোকাবিলায় একক প্রচেষ্টার চেয়ে রাজনৈতিক সীমানা পেরিয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
জা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শফি মোহাম্মদ তারেক এই মতের প্রতিধ্বনি করে বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা, এবং ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলির জন্য বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ কার্যকর হবে না।
তিনি উল্লেখ করেছেন যে, যেহেতু বাংলাদেশের বেশিরভাগ নদীর উৎস ভারতে, তাই বন্যা এবং অন্যান্য জলবায়ু সংক্রান্ত বিপদ মোকাবিলায় তথ্য আদান-প্রদান এবং একটি ঐক্যবদ্ধ আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (Early Warning System) গড়ে তোলা অপরিহার্য। এই ধরনের আঞ্চলিক সহযোগিতা কেবল পরিবেশ সুরক্ষাতেই নয়, বরং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক উত্তেজনা কমাতেও সহায়ক হতে পারে।
তবে ভূ-রাজনৈতিক জটিলতা এবং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এই ধরনের আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা বাধাগ্রস্ত করছে। নীতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশ ও জলবায়ুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে ‘রিং-ফেন্সিং’ বা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে সীমিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে বন্যা, সাইক্লোন এবং খরা থেকে সৃষ্ট দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কমানো সম্ভব হবে। এছাড়া ঢাকা, লাহোর, ও নয়াদিল্লির মতো প্রধান শহরগুলিতে ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণেও সম্মিলিত পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জরুরি।
