জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় কক্সবাজারের তরুণদের নতুন দাবি
জলবায়ু পরিবর্তন রোধ, জলবায়ুর সুরক্ষাসহ জলবায়ুতে অর্থায়ন নিশ্চিতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ এবং নবায়নযোগ্য শক্তির সম্প্রসারণ ও টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ‘জলবায়ু ধর্মঘট’ (ক্লাইমেট স্ট্রাইক) পালন করেছেন কক্সবাজারের তরুণ পরিবেশকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে তাদের দাবি জানিয়ে ‘বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট’ পালন করে অ্যাকশনএইডের যুব প্ল্যাটফর্ম অ্যাকটিভিস্টা কক্সবাজার। তার আগে এই তরুণরা কক্সবাজার শহীদ মিনার থেকে একটি র্যালি বের করে প্রেসক্লাবে আসেন।
এসময় তাদের হাতে জলবায়ুর সুরক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। যতে লেখা, ‘ফিক্স দ্য ফাইন্যান্স’, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করো’, ‘ক্ষতিকারক কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ বন্ধ করো’, ‘ক্লাইমেট জাস্টিস নাউ’, ‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার’, ‘পে আপ ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজ’, ‘পে আপ ফর ক্লাইমেট ফাইনান্স’,
‘জলবায়ু সহনশীল টেকসই কৃষি চর্চায় বিনিয়োগ করুন’, ‘পরিবেশবান্ধব পর্যটন চাই’, ‘প্যারাবন ধ্বংস করে উন্নয়ন চাই না’-সহ আরও অনেক আরও অনেক স্লোগান।
প্রেসক্লাবে সভায় জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের যুব প্ল্যাটফর্ম অ্যাক্টিভিস্টার তরুণরা। অংগ্রহনকারী জাহানারা আকতার বলেন, ক্ষতিকর জ্বালানি বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব বিকল্প আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
অপর এক জলবায়ুকর্মী তারেক কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সভা-সেমিনারে প্লাস্টিক ব্যানারসহ প্লাস্টিকজাত বিভিন্ন পণ্য পরিহার করার দাবি জানান। এছাড়াও প্যারাবন নিধন বন্ধের দাবি জানিয়ে বনায়ন বৃদ্ধির কথা বলেন কক্সবাজারের অ্যাকটিভিস্টা আকিব।
তরুণ একজন জলবায়ু যোদ্ধা সায়মন তার বক্তব্যে তুলে ধরেন, ক্ষতিকর জীবাশ্ম জ্বালানীতে বৈশ্বিক অর্থায়ন বন্ধ করা প্রয়োজন এবং বিশ্ব নেতাদের কাছে দাবি জানান, এ অর্থায়ন বন্ধ করে সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার।
কক্সবাজারে তরুণ জলবায়ু কর্মীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অ্যাকশনএইডের কর্মকর্তা তাফহীমুল জান্নাত সিফাত বলেন, জলবায়ু সমস্যা নিরসনে একসঙ্গে আওয়াজ তুলেছে কক্সবাজারের তরুণরা।
জীবাশ্ম জ্বালানীতে অর্থায়ন বন্ধের জন্য বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট থেকে আজ যে দাবি উত্থাপিত হয়েছে, সেটা জলবায়ু সুবিচার আদায়ের আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে।
জলবায়ু সংকট নিরসনে ন্যায়বিচার দাবি ও জনগণকে সচেতন করতে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ ও অ্যাক্টিভিস্টা বাংলাদেশসহ ১৫টি সংগঠনের পাঁচ শতাধিক তরুণ জলবায়ুকর্মী এই স্ট্রাইকে অংশ নেন।
একই সময় সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কুড়িগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, গাজীপুর, চাঁদপুর, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, নেত্রকোণা, কক্সবাজার, টেকনাফ এবং বরগুনাসহ ১৯ টি জেলার এবং ৭টি লোকাল ইয়ুথ হাবের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরাও গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন।
তরুণ জলবায়ুকর্মীদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের ইয়াং পিপল টিম লিডার মো. নাজমুল আহসান বলেন। তিনি বলেন, আমরা জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য তরুণদের কণ্ঠস্বরের সঙ্গে আমাদের সংহতি প্রকাশ করছি।
আমাদের এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য এখনই সবুজ উত্তরণের পথে থাকা উচিত। আমরা বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্বে সবচেয়ে জলবায়ু-চাপগ্রস্ত মানুষের দুর্বলতা এবং ক্ষতি এবং ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় বিনিয়োগের দাবি জানাই।