29.1 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১০:৩২ | ১৪ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
অবৈধ চালকলে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি
পরিবেশ দূষণ

অবৈধ চালকলে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

অবৈধ চালকলে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি

পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে জেলার রায়গঞ্জে জনবসতি ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ছোটবড় স্বয়ংক্রিয় ২৭৩টি চালকল। এসব চালকলের বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি, দূষিত হচ্ছে খালবিল নদী।

উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, উপজেলায় অনুমোদিত স্বয়ংক্রিয় ৮৬ টি বড় চালকল (অটো-রাইস মিল) রয়েছে। এর মধ্যে চন্দাইকোনা ইউনিয়নে ৮৩টি চালকল রয়েছে। মালিকেরা নিজ উদ্যোগে চালকল স্থাপনের পর খাদ্য অধিদপ্তরে আবেদন করে উৎপাদন শুরু করেন।

অধিকাংশ চালকল গুলো পরিবেশের নিয়মনীতি মেনে স্থাপন করা হয়নি। এ কারণে কারখানার গরম পানি, ছাই ও দূষিত বর্জ্যে আবাদি জমি ও নদীদূষণ হচ্ছে।

উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের চান্দাইকোনা গ্রামে গত দুই বছরে মেসার্স সামি অটোরাইস মিল, মেসার্স রিয়া অটোরাইস মিল, মেসার্স জুবলী অটোরাইস মিল ও মেসার্স মা অটোরাইস মিল সহ ছোট-বড় ৮৩টি কারখানা স্থাপন করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।

চান্দাইকোনা গ্রামে মেসার্স রিয়া অটোরাইস মিলটির চারপাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। চালকলের ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল, শ্রমিকেরা কাজ করছেন। শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার বালাই নেই।

তাঁদের মুখমন্ডল কালো ছাইয়ের আস্তর পড়ে আছে। খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন থাকলেও চালকলটিতে নেই বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা। তাই চালকলের সব বর্জ্য ফেলা হচ্ছে আবাদী জমিতে। চুল্লি দিয়ে ধোঁয়ার সঙ্গে তুষের ছাই চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে।

২০২২ সালে চান্দাইকোনা এলাকার ঘনবসতি ও ফসলি জমির মধ্যে গড়ে ওঠা রিয়া অটো রাইস মিলের যাত্রা শুরু হয়। চালকলটির চারপাশে ফসলি জমি।



জমির মাঝখানে হওয়ায় গরম পানি, ছাই ও দূষিত বর্জ্য ফেলা হয় আবাদী জমিতে। চালকলের বজ্যের কারণে ফসলি জমির ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

চান্দাইকোনা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান কার্জন জানান, মিল আমার বিদ্যালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় ১০ মিনিট দাঁড়ানো যায় না। ছাই উড়তে থাকে পুরো এলাকায়।

এতে করে আমাদের শ্রেণী কার্যক্রম মারাত্নক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সেই সাথে গাছপালার পাতা কালো হয়ে গেছে। গাছে নতুন করে কোনো ফল ধরে না। এলাকায় শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে। এসব মিল এভাবে চলতে থাকলে এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

জানতে চাইলে মেসার্স রিয়া অটো রাইস মিলের মালিক প্রিন্স বাবু বলেন, ‘অটো রাইস মিল চালালে কিছু ক্ষতি হবে, আবার উপকারও হবে। এখানে সব নিয়ম মেনেই মিলটি করা হয়েছে। সবকিছুর অনুমোদন আছে আমাদের।’

উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুর রউফ বলেন, অটো রাইস মিলের ধোঁয়া ও ছাই পরিবেশ ও ফসলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। উপজেলায় এর প্রভাব বেশি পড়ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ ও খাদ্য অধিদপ্তরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সিরাজুল ইসলাম সরকার জানান, ‘পরিবেশের ক্ষতি হলে তা দেখার দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। তারাই পদক্ষেপ নেবে। তা ছাড়া পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া একটি অটো রাইস মিলেরও অনুমোদন দেয় না খাদ্য বিভাগ।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুদ গফুর বলেন, তিন-চারটি অটো রাইস মিলের ছাড়পত্র আছে। কয়েকটার আবেদন করা আছে। তবে যারা ছাড়পত্র নিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই নবায়ন করছেন না।

মিলগুলো সময়ের অভাবে পরিদর্শন করা হয়নি। আব্দুল গফুর আরও বলেন, অবৈধ রাইস মিলের বিষয়ে অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব। তবে লাইসেন্স বা মিল বন্ধ করার এখতিয়ার আমাদের নেই। এটি খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে ফসলি জমি ও নদীদূষণ করে কোনো প্রতিষ্ঠান চালানো যাবে না। যারা এসব চালকল চালাচ্ছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই কারখানার মালিককে সতর্ক করা হবে। তারপরও নির্দেশনা না মানলে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত