তেলদূষণ নিয়ন্ত্রণে তেলখেকো ব্যাকটেরিয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে
জীবাশ্ম জ্বালানি তেল বৈশ্বিক পরিবেশদূষণের অন্যতম প্রধান কারণ। সমুদ্র ও স্থলের প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য খুব ক্ষতি করে থাকে এই তেল। তেলখেকো ব্যাকটেরিয়াকে এ সমস্যার অন্যতম সমাধান মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
তেলের ট্যাংকার ডুবে যাওয়াসহ নানা কারণে প্রাকৃতিক জলাশয়ে তেল ছড়িয়ে পড়ে। তেলদূষণের মোকাবিলা করার জন্য কর্তৃপক্ষ সাধারণত ভাসমান বেড়া বসিয়ে বোট থেকে বেড়ার ভেতর ভাসন্ত তেল ছেঁকে নেওয়ার চেষ্টা করে। যদিও সমাধানটা খুব কার্যকর নয়।
এই প্রযুক্তির কতগুলো প্রতিবন্ধকতা আছে। প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো, ভাসন্ত বেড়া বসানো সত্ত্বেও কিছু তেল ঠিকই চুইয়ে বেরিয়ে যায়। এ ছাড়া যান্ত্রিক উপায়ে সবটা তেল ছেঁকে নেওয়া সম্ভব নয়। কাজেই তেলের একটা পাতলা স্তর থেকেই যায়।
তেলখেকো ব্যাকটেরিয়া এ ধরনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে। তেলদূষণের খোঁজ পেলেই তারা সেখানে গিয়ে জড়ো হয়। পানিতে অতিক্ষুদ্র মাইক্রোঅরগ্যানিজম বা অণুবীজ তেল হজম করে। তবে তাতে অনেক বেশি সময় লাগে।
তেল খাদক ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের বিশেষ অণুজীব, যা তেলের প্রধান উপাদান হাইড্রোকার্বনকে ভেঙে ফেলতে সক্ষম। তারা খাদ্য হিসেবে তেল নেয় এবং শক্তিতে পরিণত করে। এই প্রক্রিয়াটির জন্য তেলদূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায় এবং পরিবেশ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে।
সিউডোমোনাস (Pseudomonas), অ্যালক্যানিভোরাক্স (Alcanivorax) এবং রোডোকোকাস (Rhodococcus) প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া তেলদূষণ রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে সমুদ্রের তেলদূষণ নিয়ন্ত্রণে এই ব্যাকটেরিয়া উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
ব্যাকটেরিয়া খায় তেল, ব্যাকটেরিয়াকে খায় প্ল্যাঙ্কটন। আর এভাবেই সাগরের ‘ফুড চে ’ চলতে থাকে। তেল শুষে নেওয়ার এই প্রাকৃতিক পদ্ধতি আরও অনেক ব্যাপক হারে প্রয়োগ করে, বড় ধরনের পরিবেশগত বিপর্যয় মোকাবিলা করা সম্ভব।