ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাবের উদ্যোগে ভাষা শহিদ দিবস স্মরণে সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত
আজ ২৫শে ফেব্রুয়ারী ২০২৫ মঙ্গলবার, বিকাল ৩ টায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বাংলা ভাষার জন্য মহান আত্বদান স্মরণে ও শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার নিবেদন স্বরূপ এক বনাঢ্য সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালীটির আযোজক ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাব এবং এর স্পনসর ছিল দূরন্ত বাইসাইকেল এবং কে, এ, এস গ্রুপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাব, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ এর সদস্যবৃন্দসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই শতাধিক তরুন সাইক্লিস্ট র্যালিতে অংশগ্রহন করে। র্যালিটি কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার হতে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), কলাভবন, সূর্যসেন হল হয়ে পূনরায় কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারে শেষ হয়।
র্যালির প্রারম্ভে এবং শেষে দুই পর্যায়ে সাইক্লিং এর উপকারিতার উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি তাওহীদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় সংগঠনের আন্যতম উপদেষ্ঠা রায়হান ফেরদৌস, উপদেষ্টা মাহবুদুল হাসান হাসমি, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জহির উদ্দিন, ছাত্র ও শিক্ষক কেন্দ্রের সরকারি পরিচালক সাদিয়া সবুর, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক নিউজ প্রোর্টাল গ্রীনপেইজ (The Green Page) এর প্রধান উপদেষ্টা প্রকৌশলী মো: মাহফুজুর রহমান, ব্রেন লাইফ এন্ড হসপিটাল এর ব্যবস্থাপক ফখরুল হোসেন, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি মো: আমিনুল ইসলাম টুববুস, ঢাবির ছাত্রদলের শিক্ষা ও পাঠ্য চক্রের সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, মাস্টার হুইল এর ব্যবস্থাপক আরিফ আহমেদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। জনাবা আইভি আক্তার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
বক্তাগন শরীর গঠন ও সুস্থ রাখার পাশাপাশি ব্যয় সাশ্রয়ী, সহজ ও নিরাপদ যান হিসাবে সাইক্লিং এর গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন। বক্তাগণ বলেন, জীবাস্ম জ্বালানী (প্রেট্রোল, ডিজেল, অকটেন, কয়লা ইত্যাদি) বিহীন সাইক্লিং পরিবেশ বান্ধব হিসাবে এর গুরূত্ব অপরিসিম।
ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য শহরাঞ্চলের যে অসহনীয় যানজট তা নিরসনে সাইক্লিংই হতে পারে একমাত্র বিকল্প যান। তাই দেশের সর্বত্র কম দূরুত্ব ভ্রমনের জন্য যান হিসাবে সাইক্লিং ব্যবহার প্রসারে দেশে একটা বিপল্বব সংগঠিত হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। আর তরুনরাই পারে এ রকম একটা বিপ্লব ঘটাতে।
বক্তাগন আরো বলেন দেশে সাইক্লিং প্রসারের এর প্রধান অন্তরায় হলো সাইকেল পার্কিং এর অনুপস্থিতি। অফিস- আদালত, হাট- বাজার, বিপনিবিতান, খেলার মাঠ, উদ্যান, রাস্তার মোড়ে মোড়ে, আবাসিক এপার্টমেন্ট এ মোটর গাড়ির জন্য নিদিষ্ট পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও সাইকেল রাখার জন্য কোথায়ও কোন পার্কিং এর ব্যবস্থা নাই। ফলে সাইকেল পার্কিং এর নিরাপদ ব্যবস্থা না থাকায় সাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে না।
উপরোক্ত স্থানসহ সকল জনসমাগম স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ (সম্ভাব্য স্থানসমূহে) যদি নিরাপদ সাইকেল পার্কিং এর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, তবে দেশে রাতারাতি সাইক্লিং এর প্রসার ঘটতে পারে এবং রাস্তায় সাইক্লিং এর প্রসার ঘটলে আপনা আপনিই প্রতিটি রাস্তার পাশে সাইকেল লেন তৈরী হয়ে যাবে।
বিধায় বক্তাগন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েই সাইকেল পার্কিং স্থাপনের কাজ শুরূ করা যায় বলে মত প্রকাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার, কলা ভবনসহ প্রতিটি একাডেমিক ও আবাসিক হলে, অগ্রণী বিদ্যালয়সহ কেন্দ্রিয় লাইব্রেরীর সামনে প্রতিটি স্থানে মাসে অন্তত একটি স্থানে ৫ বা ১০ টি করে সাইকেল রাখার পার্কিং স্থাপন করা শুরু করার কর্মসূচী গ্রহণ করা হলে, অল্প কিছু দিনের মধ্যে এর প্রবনতা সারা দেশে ছড়িযে পড়বে বলে বক্তাগণ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তাই দেশে সাইকেল ব্যবহার প্রসারে এখন হতেই সাইকেল প্রেমী সংগঠনসমূহ, ব্যক্তিবর্গগনকে এ কাজে নেমে পড়ার আহ্বান জানানো হয়।
র্যালি শেষে আয়োজকগণ র্যালিতে আংশগ্রহনকারী সাইক্লিষ্টগণসহ সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে র্যালী সমাপ্ত ঘোষণা র্যালিতে এবং আপ্যায়নের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।