30 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
দুপুর ২:৩১ | ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পলিনেট হাউসে চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী ময়মনসিংহের দম্পতি
কৃষি পরিবেশ পরিবেশ বিজ্ঞান

পলিনেট হাউসে চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী ময়মনসিংহের দম্পতি

পলিনেট হাউসে চারা উৎপাদন করে স্বাবলম্বী ময়মনসিংহের দম্পতি

বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে সাদা রঙের একটা ঘর। ওপরের অংশ দেখতে ঢেউখেলানো। প্রায় দোতলা উচ্চতার ঘরটির কাগুজে নাম ‘পলিনেট হাউস’।

বিশেষ পলিথিন আর লোহার পাইপ-অ্যাঙ্গেল দিয়ে তৈরি এসব ঘরের ভেতরে চলছে নানা ধরনের সবজি চাষ আর ফুল, ফল ও সবজির চারা উৎপাদন। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা—সারা বছরই চলে চারা উৎপাদনের কাজ।

ময়মনসিংহ সদরের চুরখাই জামতলা এলাকার সুইটি আক্তার ও আলামিন দম্পতি গড়ে তুলেছেন এই পলিনেট হাউস। এখানে চারা উৎপাদন করে সাড়া ফেলেছেন তারা। অর্জন করেছেন কৃষকের আস্থা। স্বল্প সময়ে নিজেদের বেকারত্ব ঘুচিয়েছেন। পাশাপাশি অনেক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, লাভজনক এবং উন্নতজাতের চারা উৎপাদনে ময়মনসিংহে পলিনেট হাউস দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন এলাকার কৃষক পলিনেট হাউস থেকে চারা কিনছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এটি চারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে নিরাপদ ও রোগবালাই মুক্ত।

সুইটি-আলামিন দম্পতি জানিয়েছেন, ফেসবুক ও ইউটিউবে পলিনেট হাউসে চারা উৎপাদনের বিষয়টি দেখে উদ্বুদ্ধ হন তারা। পরে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পারমর্শে ও সহায়তায় আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন পলিনেট হাউস গড়ে তোলেন। গত বছরের জুলাই থেকে কাজ শুরু করেন। নার্সারির নাম দেন আনিশা স্মার্ট হাইটেক অ্যাগ্রো।



এখানে উৎপাদিত চারার ব্যাপক চাহিদা ইতিমধ্যে কৃষকদের মাঝে তৈরি হয়েছে। চাহিদা অনুয়ায়ী দেশের বিভিন্ন জেলায় চারা পাঠানো হচ্ছে। অনেক কৃষক বাগানে এসে চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

আধুনিক পলিনেট হাউস গড়ে তোলার শুরুর কথা জানিয়ে সুইটি আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার স্বামীর কৃষির প্রতি আগ্রহ ছিল। পরে ফেসবুক ও ইউটিউবে পলিনেট হাউসে চারা উৎপাদন দেখে উদ্বুদ্ধ হই।

সদর উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনে নিই। কৃষি বিভাগের সহায়তায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পলিনেট হাউস গড়ি। গত জুলাই মাসে চারা উৎপাদন শুরু করি। এখানে চারা উৎপাদন লাভজনক। এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছি আমরা।’

পলিনেট হাউসে চারা উৎপাদন সম্পর্কে আলামিন হোসেন বলেন, ‘পলিনেট হাউসে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে এখানে যেসব চারা উৎপাদন করা হয়, তা সুস্থ সবল হয়। পোকামাকড় ভেতরে আসার সুযোগ নেই। উৎপাদিত চারা শতভাগ রোগবালাইমুক্ত। বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে বেশি দামে বীজ কিনি।

তাতে ভালো চারা হয়। কৃষকরা সেই চারা কিনে সফলতা পান। এ ছাড়া কোকোপিট (মাটির পরিবর্তে নারকেলের ছোবড়ার ব্যবহার) পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করায় চারার শিকড় ছিঁড়ে যায় না। চারা টেকসই হয়। এ কারণে কৃষকদের আস্থা বেড়ে যায়।’

পলিনেট হাউসের মাধ্যমে দেশের যেকোনো জায়গায় এবং যেকোনো আবহাওয়ায় চারা উৎপাদন করা যায় বলেও উল্লেখ করেন এই উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, ‘এটি উন্নত জাতের চারা উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পলিনেট হাউসে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি এবং প্রয়োজনে কুয়াশা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষকদের চাষাবাদে সমস্যা হয়। এই কারণে পলিনেট হাউস কৃষি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। এখন বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকরা আসছেন এবং চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।’

স্থানীয় কৃষক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু আশপাশের নয়, বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষকরা এসে এখানকার উৎপাদিত চারা নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এখানের চারা নিয়ে ফসল ফলিয়ে লাভবান হচ্ছি।’

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার জুবায়রা বেগম সাথী বলেন, ‌‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পলিনেট হাউস জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এটি সারা দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া গেলে নিরাপদ চারা উৎপাদন করে লাভবান হবেন কৃষকরা। আমরা সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, ময়মনসিংহে ১২০টি পলিনেট হাউস গড়ে উঠেছে। কৃষির উন্নয়নে এমন আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন পলিনট হাউস সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে কৃষি বিভাগ।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত