টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG) অর্জনের সঠিক পথে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাদিয়া নূর পর্সিয়া (৭ম সেমিস্টার স্টুডেন্ট,
ইংরেজী বিভাগ, আইইউবি, ঢাকা)
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারের সময়োপযোগী উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশ এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (Sustainable Development Goals -SDG) অর্জনের সঠিক পথে রয়েছে।
আমরা সহস্রাব্দ উন্নয়নের লক্ষ্য (Millennium Development Goals-MDG) অর্জনে দর্শনীয় সাফল্য অর্জন করেছি এবং (SDG)অর্জনের জন্য আমরা ইতোমধ্যে সঠিক পথে রয়েছি, গত ১৪/০১/২০২০ তারিখে “ভবিষ্যৎ টেকসই (উন্নয়ন) সম্মেলন(Future Sustainability Summit) ” শীর্ষক অধিবেশন চলাকালীন এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
ভবিষ্যৎ টেকসই উন্নয়ন সম্মেলনের ‘জলবায়ু কর্মে নারীদের গুরুতর ভূমিকা “(The Critical Role of Women in Delivering Climate Action)” শীর্ষক সাক্ষাৎকার অধিবেশন আবুধাবি জাতীয় প্রদর্শনী কেন্দ্র, আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত হয় – প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের একথা জানান।
জাতিসংঘে এসডিজি উন্নয়নের আলোচনার সাথে বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে জড়িত ছিল উল্লে¬খ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা বিবেচনা করি যে এটি (SDG Development) বিশ্ববাসীর জন্য সকল দেশ কর্তৃক গৃহীত একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত ।”

তিনি এ মতামত প্রদান করেন যে, যদি উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে দৃশ্যমান না হয় বরং বৈষম্য ও আরও অসমতা সৃষ্টি করে, তবে এটিকে বৈষয়িক বৃদ্ধি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, উন্নয়ন হিসেবে নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য নীতি সমন্বয়য়ের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন যাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণে রুপান্তরতি করা যায়।
অন্য প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা এসডিজির পূর্বে আমাদের ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১ ঘোষণা করেছি এবং এতে সরকারের নীতিসমূহের সমন্বয় এবং টেকসই উন্নয়নকে একত্রীভ’ত করেছি।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে উন্নয়নের সমস্যা সর্বদা স¤পদের অভাবের কারণে ঘটে না বরং ন্যায়সঙ্গত বণ্টনের অভাবেও হয়।”
শেখ হাসিনা বলেন যে, তাঁর সরকার নারী ও শিশু, সাধারণ দরিদ্র স¤প্রদায়, প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মতো অবহেলিত এবং অসুরক্ষিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চহ্নিতি করেছে ।
প্রান্তকি মানুষের উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উলে¬খ করে তিনি বলেন, “আমি শিক্ষা দিয়ে শুরু করেছি এবং আমার সরকার ২৬,১৯৩ টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৬৮৫ টি মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রতিবন্ধী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকার বিনামুল্যে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমার বাড়ি, আমার খামার” প্রকল্পের আওতায় এখন দেশে ছয় মিলিয়ন দরিদ্র পরিবার ১০১,০৪২ টিরও বেশি গ্রামীণ সমবায় সমিতির মাধ্যমে সংঘবদ্ধ হয়েছে ।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) জানিয়েছে, শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ পরিবার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির আওতাভুক্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার মুক্তিযোদ্ধা, বিধবা ও পারিবারিক সহিংসতার শিকার, অক্ষম ব্যাক্তি ও শিক্ষার্থী, যাযাবর ও সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়, চা বাগান কর্মী, দরিদ্র ও স্তন্যদানকারী মা এবং এমনকি তৃতীয় লিঙ্গের ব্যাক্তিদেরও বিভিন্ন উপায়ে নগদ অর্থ প্রদান করে আসছে ।
রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশে ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা যাদেরকে জোড় র্পূবক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে, তাদের খাদ্য, আবাসন, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য জরুরি সেবাসহ প্রয়োজনীয় সকল বাস্তব সহায়তা / পরিষেবা / সরবরাহ তাঁর সরকার করে আসছে ।
জলবায়ু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও কার্বণ নিঃসরণের জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়, কার্বণ নিঃসরণের ফলে জলবায়ু পরিবর্তণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম।
তিনি বলেন “আমরা অলসভাবে বসে থাকিনি এবং জলবায়ু পরিবর্তণের অভিযোজনের (Adaptation) জন্য নিজস্ব সংস্থান দিয়ে একটি জলবায়ু পরিবর্তন কল্যাণ তহবিল গঠন করেছি।”
SOURCE: The Financial Express