‘ল্যানসেট কাউন্টডাউন’ রিপোর্ট: ল্যান্সেট রিপোর্ট এবং তাপ-সম্পর্কিত অর্থনৈতিক ক্ষতি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ‘ল্যানসেট কাউন্টডাউন’ রিপোর্ট এক কঠোর তথ্য প্রকাশ করেছে: ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বাংলাদেশের জন্য একাধিক স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই রিপোর্ট অনুযায়ী, অতিরিক্ত গরমের কারণে এক বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয়েছে। এই ক্ষতি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে উষ্ণ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর পড়া অর্থনৈতিক চাপের তীব্রতা তুলে ধরে।
রিপোর্টটি বিশ্লেষণ করে দেখায়, উচ্চ তাপমাত্রা বিশেষ করে কৃষি এবং নির্মাণ খাতের মতো আউটডোর শ্রমিকদের কাজ করার ক্ষমতাকে সীমিত করে দিয়েছে। ‘হিট স্ট্রেস’ (Heat Stress) বা তাপজনিত চাপ বৃদ্ধির কারণে কাজের সময় কমছে, যার ফলে জাতীয় উৎপাদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এটি এমন একটি সমস্যা, যা ভারত ও পাকিস্তানের মতো দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য উষ্ণ দেশেও দ্রুত বাড়ছে। অথচ এই উন্নয়নশীল দেশগুলোর কার্বন নির্গমন তুলনামূলকভাবে কম হলেও, তারা তাপ মোকাবিলা করার দুর্বল অবকাঠামো ও সক্ষমতার কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, যথাযথ অভিযোজন কৌশল (Adaptation Strategies) গ্রহণ না করা হলে ২০৩৫ সালের পরবর্তী ৮০ বছরে বিশ্বে তাপ-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা আরও প্রায় ১৩ লাখ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এই মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত হবে দ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন বাড়ানো এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিতে তাপ-সহনশীল অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা করা। ল্যানসেট রিপোর্টটি পুনর্ব্যক্ত করেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদার করা জরুরি।
