অ্যান্টার্কটিকাতে ক্রিল শিকারের রাজনীতি : রুশ বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ অভিযোগ
পরিবেশগত উদ্বেগ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি বর্তমানে অ্যান্টার্কটিক অঞ্চলে সামুদ্রিক প্রাণীর খাদ্যশৃঙ্খলের মূল উপাদান ‘ক্রিল’ (Krill) শিকারের কেন্দ্রবিন্দুতে এসে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি, রাশিয়ার একজন শীর্ষস্থানীয় পরিবেশ বিজ্ঞানী, যিনি অ্যান্টার্কটিকায় ক্রিল শিকারের উপর বিধিনিষেধ আরোপের পক্ষে ছিলেন, তার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’-এর গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে, গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র রক্ষার বৈজ্ঞানিক সুপারিশগুলি কীভাবে সরাসরি অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের সংঘাতে পরিণত হচ্ছে।
ক্রিল হলো পেঙ্গুইন, সীল এবং নীল তিমির মতো প্রাণীর প্রধান খাদ্য। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে আসছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রিলের সংখ্যা কমে আসছে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক ক্রিল শিকার বৃদ্ধি পাওয়ায় এই প্রজাতিগুলোর অস্তিত্ব আরও সংকটে পড়েছে।
গ্রেফতার হওয়া এই বিজ্ঞানী ক্রিল শিকারের জন্য নির্ধারিত কোটা (quota) কমানোর পক্ষে আন্তর্জাতিক মহলে সক্রিয় ছিলেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’-এর অনুসন্ধানে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, তিনি ক্রিল আহরণের উপর বিধিনিষেধ আরোপে উৎসাহিত করে ‘রাশিয়ার অর্থনৈতিক স্বার্থের ক্ষতি’ করছেন।
এই ঘটনা কেবল একটি পরিবেশগত অপরাধ নয়, এটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের গবেষণার স্বাধীনতার উপর একটি বড় আঘাত। চলতি বছর প্রথমবারের মতো, ক্রিল শিকারের পরিমাণ বিজ্ঞানীরা যে স্তরকে ‘অসহনীয় (unsustainable)’ মনে করেন, সেই মাত্রা অতিক্রম করেছে।
পরিবেশবাদী গোষ্ঠী এবং পশ্চিমা দেশগুলি এই গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং আর্টিক অঞ্চলে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য দ্রুত কঠোর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
