আর্টিকের কালো কার্বন : বরফ গলার গতি বাড়িয়ে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ
আর্কটিক (Arctic) অঞ্চলে শিল্প দূষণ এবং অবৈধভাবে জাহাজ চলাচলের কারণে নির্গত ‘কালো কার্বন’ (Black Carbon)-এর জমা হওয়া নিয়ে পরিবেশগত অপরাধের নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
কালো কার্বন হলো অসম্পূর্ণ দহনের ফলে সৃষ্ট সূক্ষ্ম কণা, যা বরফ এবং তুষারের উপর জমা হলে সূর্যের আলো শোষণ করে এবং বরফ গলার প্রক্রিয়াকে অস্বাভাবিক দ্রুত করে তোলে। এই প্রক্রিয়াটি আর্কটিকের জীববৈচিত্র্য এবং বৈশ্বিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য এক গুরুতর হুমকি।
সাম্প্রতিক গবেষণা অনুযায়ী, আর্কটিকের উপর জমা হওয়া এই কালো কার্বনের একটি বড় অংশ আসে অপরিশোধিত এবং অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ চলাচল এবং রাশিয়ার মতো উত্তরাঞ্চলীয় দেশগুলির শিল্প কার্যক্রম থেকে।
বরফের উপর কালো কার্বন জমার ফলে তার আলোর প্রতিফলনের ক্ষমতা (Albedo Effect) কমে যায়। ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NOAA)-এর বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, এই বর্ধিত শোষণ ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।
সমুদ্র পথ উন্মুক্ত হওয়ায় আর্টিকের নতুন শিপিং রুটগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু জ্বালানির ব্যবহার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত না হওয়ায় এই দূষণ আরও বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক পরিবেশগত পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলি আর্টিকের সংবেদনশীল অঞ্চলে কালো কার্বন নির্গমন কমানোর জন্য কঠোর আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন এবং পুরনো জাহাজগুলিকে পরিষ্কার জ্বালানিতে রূপান্তরের জন্য দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, এই দূষণের উৎস এবং পাচারকারীদের শনাক্ত করতে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি বাড়ানোও অত্যাবশ্যক।
