বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর ডিএনএ উদ্ধার : ডিএনএ প্রযুক্তিতে সংরক্ষণ প্রচেষ্টা
জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসের কারণে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষণের জন্য বিজ্ঞানীরা এখন অত্যাধুনিক ডিএনএ প্রযুক্তি (DNA Technology)-র উপর নির্ভর করছেন।
‘জিনোম সিকোয়েন্সিং’ এবং ‘এক্স-সিটু সংরক্ষণ’ (Ex-Situ Conservation) কর্মসূচির আওতায় বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের জেনেটিক উপাদান (DNA) সংগ্রহ করে বিশেষ ‘জিন ব্যাংক’ (Gene Bank)-এ সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এটি ভবিষ্যতের জন্য এক মূল্যবান ‘জেনেটিক লাইব্রেরি’ তৈরি করছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN)-এর রেড লিস্ট অনুযায়ী, আর্কটিক সিল, গাঙ্গেয় ডলফিন এবং বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপসহ বহু প্রাণী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অস্তিত্বের সংকটে রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই প্রাণীদের জিনগত বৈচিত্র্য (Genetic Diversity) অধ্যয়ন করছেন, যাতে পরিবর্তিত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য তাদের অভিযোজন ক্ষমতা (adaptability) বোঝা যায়।
স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল জুওলোজিক্যাল পার্ক (Smithsonian National Zoological Park)-এর একটি নতুন প্রকল্পে, অতি বিপন্ন প্রজাতির জিনগত উপাদান ব্যবহার করে ‘প্রজনন প্রোগ্রাম’ (Breeding Program) উন্নত করার চেষ্টা চলছে, যাতে তাদের টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে।
এছাড়াও, কিছু বিজ্ঞানী বিতর্কিতভাবে ‘ডি-এক্সটিংশন’ (De-Extinction) বা বিলুপ্ত প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের দিকে নজর দিচ্ছেন, যদিও এর নৈতিক দিক নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সংরক্ষিত এই জেনেটিক ডেটা ভবিষ্যতে আবহাওয়ার চরমভাবাপন্নতা এবং নতুন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী প্রজাতি তৈরি করতে সহায়তা করবে। এই জিন ব্যাংকগুলি কেবল একটি সংরক্ষণ কৌশল নয়, বরং বিলুপ্তির মুখে থাকা জীববৈচিত্র্যকে রক্ষা করার জন্য মানবজাতির সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করছে।
