-মোঃ রাজিবুল ইসলাম (রাজিব)
প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের সাথে সাথে আমরা ধ্বংস করে চলেছি আমাদের দেশীয় মাছের প্রজাতিগুলো। দেশীয় মাছ যখন ডিম দেবে ঠিক তখনই মাছ শিকার করা হয় আমাদের দেশে।
ইলিশ মাছ ধরার ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের বিধি নিষেধ থাকলেও দেশীয় মাছ রক্ষার ব্যাপারে ততোটা পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। অবশ্য আমরাই যদি সচেতন না হই তাহলে সরকারি পদক্ষেপে কত কাজ হবে সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থাকে। সামনেই দেশীয় মাছের ডিম দেওয়ার সময় । আর এখনই অনেক স্থানে ডিমওলা মাছ ধরা হচ্ছে।

প্রতিবছর বৃষ্টির শুরুর দিকে বিলে মাছ শিকার করার সব সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয় মাছ শিকারিরা। তারা সব ডিমওয়ালা মাছ শিকার করে থাকে।
সকল ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে এমনিতেই কমে গেছে দেশীয় মাছ। শুধু কীটনাশক বললে ভুল হবে দেশীয় মাছ ধ্বংসের অনেক কারণ রয়েছে।

দেশীয় মাছ হারিয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে জলবায়ুর পরিবর্তন জনিত কারণকে। এছাড়াও আরো বহুবিদ কারণ রয়েছে।
যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো- প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ফসলি জমিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার, নদ-নদীর নব্যতা হ্রাস, উজানের মুখে বাঁধ নির্মাণ, ডিম ছাড়ার আগেই মা মাছ ধরে ফেলা, কারেন্ট জালের অবৈধ ব্যবহার, ডোবা-নালা, পুকুর ছেঁকে মাছ ধরা, মাছের প্রজননে ব্যাঘাত ঘটানো, খালের গভীরতা কমে যাওয়াসহ আরো নানান কারণে ৫০ টিরও বেশি দেশি প্রজাতির মাছ হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের মাঝ থেকে।
আগের তুলনায় হাট-বাজারে দেশীয় মাছ নেই বললেই চলে। এখন হাটে গেলে শুদু চাষকৃত মাছ পাওয়া যায়। আগের মতো এখন আর দেশীয় কৈ, পুঁটি, শিং, মাগুর, চেলা, ঢেলা, মলা, শৌল, ভ্যাদা, বাইম, চিংড়ি, খলিসা, টাকি, বালিয়াসহ আরো নানান নামের ও প্রজাতির মাছ বেশি পাওয়া যায় না। মৎস্য অধিদফতরের ২০১৮ সালের তথ্যানুযায়ী হারিয়ে যাওয়া দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যা ২৫০ এরও বেশি।

দেশীয় মাছ রক্ষার জন্য সরকারের সাথে সাথে আমাদেরও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গ্রাম বাংলা সকল শিক্ষিত মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।
গ্রামের শিক্ষিত মানুষ এগিয়ে আসলেই কেবল দেশীয় মাছ রক্ষা করা যেতে পারে। পরিবারের শিক্ষিতরা যদি তাদের পরিবারের অন্যাদের বোঝায় তাহলে দেশীয় মাছ রক্ষায় অনেকটা ভূমিকা রাখা হবে বলে মনে করা হয়। তাই যার যার স্থান থেকে নিজ দ্বায়িত্বে দেশীয় মাছ রক্ষা করার জন্য এখনই উপযুক্ত সময়।