27 C
ঢাকা, বাংলাদেশ
রাত ১০:৪০ | ৩১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ বঙ্গাব্দ
গ্রীন পেইজ
পলিথিন বর্জ্যে দূষিত শ্রীপুরের হাজার বিঘা জমি
পরিবেশ দূষণ

পলিথিন বর্জ্যে দূষিত শ্রীপুরের হাজার বিঘা জমি

পলিথিন বর্জ্যে দূষিত শ্রীপুরের বিঘা জমি

গাজীপুরের শ্রীপুরে উপজেলার দোখলা এলাকায় পলিথিন বর্জ্য মিশছে ফসলি জমিতে। যত দূর চোখ যায় শুধু পলিথিন আর পলিথিন। মাসের পর মাস বছরের পর বছর চলে গেলেও এ থেকে উত্তরণের কোনো পথ পাচ্ছেন না স্থানীয় কৃষকেরা। এতে হাজার হাজার বিঘা জমিতে কৃষি উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে।

শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদের চালা ও গিলারচালা গ্রাম এবং মাওনা ইউনিয়নের বেলতলী ইন্দ্রবপুর গ্রামের ফসলের মাঠে শুধু পলিথিন আর পলিথিন। এই এলাকাটি দোখলা নামে পরিচিত।

বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের রাসায়নিকযুক্ত পানি আর উপজেলার সব ময়লা, বর্জ্য ও পলিথিন বিভিন্ন খাল হয়ে চলে আসছে ফসলি জমিতে। যার কারণে এই অঞ্চলের কৃষকেরা জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন না। ফসলি জমিতে কয়েক স্তরের পলিথিন বর্জ্য জমা হয়েছে।



স্থানীয় কৃষক এনামুল হক বলেন, ‘আমার সাড়ে চার বিঘা কৃষি জমিতে ফসল উৎপাদন বন্ধ পাঁচ বছর ধরে। ধান রোপণ করার পর প্রথমে ভালো ফলনের সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পচন শুরু হয়ে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে ফসল উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে।’

বেলতলী গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, ‘জমির যে অবস্থা ধান তো দূরের কথা, জমির পাশ দিয়ে চলাচল করাই কঠিন। পলিথিন ছাড়া আর কিছু নেই জমিতে। অনেক আন্দোলন করার পরও পলিথিন ফেলা বন্ধ হয়নি খালে।

খাল থেকে পলিথিন বর্জ্য ফসলি জমিতে মিশে একাকার হচ্ছে। বর্তমান আমাদের গ্রামের কোনো জমিতে ফসল উৎপাদন হয় না।’

বেড়াইদের চালা গ্রামের কৃষক মিলন মিয়া বলেন, কৃষি জমিতে প্রচুর পরিমাণ পলিথিন বর্জ্য জমা হয়েছে, বাধ্য হয়ে এই অঞ্চলের হাজার হাজার বিঘা জমিতে কৃষি উৎপাদন বন্ধ হয়েছে। এখন এই অঞ্চলের কৃষি জমিতে কারও নজর নেই। পলিথিনের জন্য বর্তমানে নিজের খেতের সীমানা চিহ্নিত করাও কঠিন।

পরিবেশ কর্মী মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘লবলঙ্গ খালের পাড়ের কৃষিজমি রক্ষার জন্য আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি। সভা-সেমিনার, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, স্মারকলিপি দিয়ে চেষ্টা করে আসছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাস্তবে কোনো কাজ করেনি। আমরা এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগানের বাস্তবায়ন চাই।’



মাওনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম খোকন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে একসময় প্রচুর পরিমাণে ধানসহ সব ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন হতো।

আজ বিভিন্ন কল-কারখানার দূষিত কেমিক্যালযুক্ত পানি আর পলিথিন বর্জ্য কৃষি জমিতে মিশে ফসল উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে। প্রশাসন চাইলে আমার এলাকায় কৃষি উৎপাদন আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে পারবে।’

শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা বলেন, ‘হাজার হাজার বিঘা জমিতে আজ কৃষি উৎপাদন বন্ধ। বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও উপজেলার সব ময়লা–বর্জ্য পলিথিন খাল হয়ে ফসলি জমিতে মিশে গেছে।

হুমকিতে রয়েছে আরও অনেক ফসলি জমি। ইতিমধ্যে আমি পলিথিনের কারণে ফসল উৎপাদন বন্ধ হওয়া জমিগুলো পরিদর্শন করে দেখেছি। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এখন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়া হলে এই এলাকার কৃষি উৎপাদন হুমকিতে পড়বে।’

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি জমি রক্ষার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় চেষ্টা করা হচ্ছে। কৃষিকে রক্ষা করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে লবলঙ্গ খালের অংশে ময়লা, বর্জ্য ও পলিথিন ফেলা বন্ধ হয়েছে।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নয়ন মিয়া বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে পরিবেশ রক্ষার জন্য সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। নদ-নদী, খাল-বিলে অবৈধভাবে পলিথিন বর্জ্য সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

“Green Page” কে সহযোগিতার আহ্বান

সম্পর্কিত পোস্ট

Green Page | Only One Environment News Portal in Bangladesh
Bangladeshi News, International News, Environmental News, Bangla News, Latest News, Special News, Sports News, All Bangladesh Local News and Every Situation of the world are available in this Bangla News Website.

এই ওয়েবসাইটটি আপনার অভিজ্ঞতা উন্নত করতে কুকি ব্যবহার করে। আমরা ধরে নিচ্ছি যে আপনি এটির সাথে ঠিক আছেন, তবে আপনি ইচ্ছা করলেই স্কিপ করতে পারেন। গ্রহন বিস্তারিত