প্লাস্টিক ও পলিথিন দ্রব্যের বিনিময়ে মিলেছে গাছ
১৪তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে সম্প্রতি অভিনব এক উদ্যোগ নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন—স্বপ্নোত্থান। যেখানে প্লাস্টিক ও পলিথিন দ্রব্যের বিনিময়ে মিলেছে গাছ।
২২-২৩ আগষ্ট, দুই দিনব্যাপী চলা এ কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। প্রথম দিন বুথ খোলার আগেই এক বস্তা প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে হাজির বেশ কয়েকজন।
আর দ্বিতীয় দিন ব্যাগভর্তি বোতলের সঙ্গে দেখা গেল চিরকুট। তাতে লেখা, ‘টেন্টের সামনে বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ৯টায় ক্লাস থাকার কারণে চলে যেতে হচ্ছে। কিন্তু বোতলগুলো রেখে গেলাম। আমার জন্য অবশ্যই একটি এডেনিয়ামগাছ রাখবেন।’
শুধু এডেনিয়ামই নয়, মেস্তা জবা, জুঁই, হাসনাহেনা, রুয়েলিয়া, নয়নতারা, নীল অপরাজিতা, অলকানন্দাসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক গাছ দেওয়া হয় এ কার্যক্রমে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জুনতলায় বসে সংগঠন স্বপ্নোত্থানের বুথ, যা সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এ সময় শিক্ষার্থী ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।
স্বপ্নোত্থানের সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দিন মিলিয়ে প্রায় ২২০০ প্লাস্টিকের বোতল ও ১০০০–এর বেশি পলিব্যাগ আমরা সংগ্রহ করেছি। এ ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৫টি প্লাস্টিকের বোতল অথবা সর্বনিম্ন ১৫টি পলিথিন দ্রব্যের বিনিময়ে ১টি করে গাছের চারা দেওয়া হয়। কার্যক্রমটিতে আমাদের ৫০ জনের বেশি সদস্য যুক্ত ছিলেন।’
খাদ্য প্রকৌশল ও চাপ্রযুক্তি বিভাগের এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘মানবসেবার আরেকটি রূপ হলো প্রকৃতিসেবা। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় থাকলে মানুষ সুস্থ থাকবে।
অন্যদিকে, প্লাস্টিক ও পলিথিন প্রকৃতির এ ভারসাম্যহীনতার জন্য সরাসরি দায়ী। সেখান থেকেই আমরা চিন্তা করি, যদি প্লাস্টিক ও পলিথিন দ্রব্যের বিনিময়ে গাছের চারা দেওয়া যায়, তাহলে গাছগুলো সুস্থভাবে বেড়ে উঠবে। একই সঙ্গে তৈরি হবে সচেতনতা।
এখন থেকে ‘বিনিময়ে নৈসর্গ’ প্রোগ্রামটি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই থাকবে বলে জানালেন ক্লাবসংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি নিজেদের ‘এডুকেশন, চ্যারিটি ও ব্লাড উইং’-এর মাধ্যমে বৈষম্যহীন সমাজ গড়ায় ভূমিকা রাখতে চায় সংগঠনটি।