ফ্রান্সে ম্যাক্রঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগে বিশাল বিক্ষোভ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বড় ধরণের বিক্ষোভ প্রদর্শিত হয়েছে। পরিবেশের পরিবর্তন রুখতে তিনি একটি বিল এনেছেন।
কিন্তু পরিবেশবিদ ও অধিকার রক্ষা কর্মীরা মনে করছেন, ম্যাক্রঁ বিলে যে ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন, তা যথেষ্ট নয়। তাই গত রবিবার গোটা ফ্রান্স জুড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে পরিবেশ রক্ষা কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করান।

ফ্রান্স জুড়ে মোট ১শো ৬০টি প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। সংগঠকদের দাবি, তাতে এক লাখ পনেরো হাজার মানুষ যোগ দিয়েছেন। বেশ কিছু এনজিও ও ট্রেড ইউনিয়ন বিক্ষোভে যোগ দেয়।
যোগ দেয় পরিবেশ সচেতন ছাত্ররাও। পুলিশ অবশ্য বলছে, সব মিলিয়ে বিক্ষোভকারীর সংখ্যা সাত চল্লিশ হাজারের মতো। প্যারিসে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্যাট্রিশিয়া বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁকে নিয়ে হতাশ। পরিবেশ রক্ষায় তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেননি।

আরও পড়ুন:
চীন ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নেট শূণ্য নির্গমনের লক্ষ্যে রয়েছে – শি জিনপিং
মাক্রোঁর পরিকল্পনা
ম্যাক্রঁর বিলটি মূলত ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাশ হয়ে গেছে। সেই বিলে উল্লেখ রয়েছে, ফ্রান্সের ভেতরে যে স্থানে প্লেনে যেতে সর্বোচ্চ আড়াই ঘণ্টার মতো লাগে এবং যেখানে ট্রেনে যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে বাধ্যতামূলক ট্রেনেই যেতে হবে।
তেলের বিপরীতে ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো হবে। যেসব বহুতল ভবনে প্রচুর বিদ্যুত ব্যবহার করা হয়, তার বিদ্যুত ব্যবহার কমানোর জন্যে পুনঃপরিকল্পনা ও নকশার পরিবর্তন করতে হবে।
২০১৭ সালে ম্যাক্রঁ দেশবাসীর সামনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি পরিবেশ নিয়ে গণভোট করবেন। কিন্তু ফ্রান্সের একটি সাপ্তাহিক রবিবার জানিয়েছে, সেই পরিকল্পনা আপাতত অনেকটা বাধ্য হয়েই স্থগিত রাখা হয়েছে।
কেননা, ফ্রান্সের সংবিধান অনুসারে এই গণভোট নিতে হলে পার্লামন্টের উভয় কক্ষে তা অনুমোদন করাতে হয়। কিন্তু উচ্চকক্ষ সিনেটে ম্যাক্রঁবিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তাদের সঙ্গে পরিবেশসংক্রান্ত গণভোট নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেননি ম্যাক্রঁ। তিনি অবশ্য বলেছেন, গণভোটের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হচ্ছে না।
পরিবেশ রক্ষার জন্য
ফ্রান্স দশ হাজার কোটি টাকার করোনা-প্যাকেজ হাতে নিয়েছে। তাতেও যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণ ১৯৯০ সালের তুলনায় পঞ্চান্ন শতাংশ করা হবে। গত মাসে ইইউ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে ‘ক্লাইমেট নিউট্রাল’-এর লক্ষ্য নিয়ে চলবে তারা। —
জিএইচ/এসজি( এপি, রয়টার্স, এএফপি, ডয়েচেভেলে)