শৈবাল-ভিত্তিক বায়ো-জেট ফুয়েল : ‘শৈবাল-ভিত্তিক বায়ো-জেট ফুয়েল’ বাণিজ্যিক উৎপাদনের পথে
বৈশ্বিক উষ্ণায়নে অন্যতম বৃহৎ অবদানকারী বিমান চলাচল শিল্প (Aviation Industry) এখন একটি শূন্য-কার্বন (zero-carbon) সমাধানে পৌঁছানোর পথে। বিজ্ঞানীরা কম খরচে, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এবং পরিবেশবান্ধব শৈবাল-ভিত্তিক বায়ো-জেট ফুয়েল (Algae-based Bio-Jet Fuel) তৈরি এবং এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পথে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছেন।
এই নতুন জ্বালানি উৎপাদনে ব্যবহৃত শৈবাল বা অ্যালজিগুলি সালোকসংশ্লেষণের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। এরপর এই শৈবাল থেকে তেল নিষ্কাশন করে তা জেট ফুয়েলে রূপান্তরিত করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি প্রচলিত জীবাশ্ম-ভিত্তিক জেট ফুয়েলের তুলনায় ৮০% পর্যন্ত কম কার্বন নির্গত করে।
নেদারল্যান্ডসের ডেলফট ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (Delft University of Technology)-এর গবেষকরা এমন একটি প্রক্রিয়া পেটেন্ট করেছেন যা শৈবাল বৃদ্ধির সময় জলের ব্যবহার এবং উৎপাদন খরচ নাটকীয়ভাবে কমাতে সক্ষম।
এই বায়ো-ফুয়েলগুলি খাদ্যশস্য (যেমন ভুট্টা বা সয়াবিন) ব্যবহার করে তৈরি করা বায়োফুয়েলের চেয়ে অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব, কারণ এর জন্য কৃষি জমির প্রয়োজন হয় না। বিশ্বের বৃহত্তম এয়ারলাইনস এবং বিমান নির্মাতারা এই শৈবাল-ভিত্তিক জ্বালানি উৎপাদনে বিনিয়োগ করছে, কারণ এটি তাদের ২০৫০ সালের মধ্যে ‘নেট-জিরো’ লক্ষ্য পূরণের জন্য অপরিহার্য।
এই প্রযুক্তি প্রমাণ করে যে, সবচেয়ে কঠিন শিল্পগুলিতেও জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প তৈরি করা সম্ভব, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এক নতুন ‘সবুজ জ্বালানি’ অর্থনীতির জন্ম দেবে।
